জবি প্রতিনিধি

  ১৭ মার্চ, ২০২৩

ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজিসহ পাঁচ জনকে আসামি করে চাদাঁবাজির অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১৫ মার্চ) ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে মামলাটি করেন মশিউর রহমান লিজন নামে এক ব্যবসায়ী।

আইনজীবী জহির কামাল জানিয়েছেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ওয়ারী থানার ওসিকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মশিউর রহমান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মামলার অন্য আসামিরা হলেন ফরহাদ ব্যাপারী, আরশাদ আকাশ, রাসেল চাকলাদার ও টুটুল আহম্মেদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘২০২২ সালের ২৫ আগস্ট আসামি ফরহাদ ব্যাপারী বাদীর কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ৪ লাখ টাকা ধার নেন এবং ব্যবসায় লাভ হলে লভ্যাংশ দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিছু দিন পর বাদী আসামির কাছে টাকা চাইলে তিনি জানান, ব্যবসায় লোকসান হয়েছে এবং শিগগিরই টাকা ফেরত দেবেন। এরপর গত বছরের ৫ অক্টোবর পাওনা টাকা চাইলে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন ফরহাদ। ইব্রাহিম ফরাজি বাদীকে তাদের সমস্যার সমাধান করে দেবেন বলে জানান এবং তাকে দেখা করতে বলেন। ১৮ নভেম্বর ফরাজির কথা মত তার ঠিকানায় পৌঁছালে আসামিরা তাকে রুমের ভেতর নিয়ে মারধর করেন। এর মধ্যে আসামি আরশাদ আকাশ পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাদীকে পিস্তল ঠেকিয়ে একটি আইফোন এবং ১১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন এবং তার হাতে পিস্তল দিয়ে ছবি তুলে তার বিরুদ্ধে মামলা দেবে বলে হুমকি দেয়। তার মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে আরো ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং এসব বিষয়ে কাউকে কিছু জানলে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাদীকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’

ভুক্তভোগী লিজন এ বিষয়ে বলেন, ‘ফরহাদ আমার থেকে প্রথম টেন্ডারে ৩ লাখ টাকা নেয়। পরে অন্য একটা টেন্ডারে তা ফেরত দেয়। টাকা লেনদেন হয়েছে আমাদের দুজনের মধ্যে কিন্তু ইব্রাহীম ফরাজি এখানে এসে আমাকে জিম্মি করে টাকা নেওয়ার কে?'

অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ও আমার থেকে আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে। টালবাহানা করে পুলিশের ডিজির কথা বলে টাকাটা নিয়েছে, পরে টাকাও দেয় না কাজও দেয়নি। পরে কাজ অন্য পার্টি পেয়েছে। পরে আমি টাকা চাইলে ওরে আর পাই না। পরে আমার এক বন্ধুকে দিয়ে ওকে নিয়ে আসলাম ও তখন কথা দিলো একসপ্তাহের মধ্যে টাকাটা দিয়ে দিবে। যেহেতু সে জগন্নাথের তাই ওখানকার সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ভাইকে জানালাম। পরে ইব্রাহিম ভাইয়ের বাসায় ওকে নিয়ে বসালাম, ফরাজির ভাইয়ের সামনে আমাকে ৩ লক্ষ টাকা দিলো।’

আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গ্রাম্য আদালত বলতে তো একটা বিষয় আছে, আমি তার ইউনিট সভাপতি হিসেবে ফরাজি ভাইকে এটা জানিয়েছি। লিজন ছাড়াও ওখানে টুটুল ভাই ছিলো, রাহাত ছিলো, পাভেল, রাসেল ছিলো সবার সামনে টাকা দিছে ওকে জোরজবরদস্তি করা হয়নি। ৬ মাস ঘুড়িয়েছে ও আমাকে, পরে ওর সভাপতি ওকে বলে টাকাটা আমাকে পাইয়ে দিছে।’

পুলিশ কর্মকর্তা আকাশ বলেন, ‘ওই ছেলে ফরহাদের কাছ থেকে টাকা নেয়, পরে ফরহাদ আমাকে বিষয়টা জানায়, পরে ইব্রাহিমের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিলো, ইব্রাহিম এটা উঠায় দিছে। এটার সঙ্গে আমি কোনভাবেই জড়িত না, আপনি ইব্রাহিমকে ফোন দেন। আমি শুধু ইব্রাহিমের কাছে ফরহাদকে পাঠিয়েছি। ইব্রাহিম এটা সমাধান করে দিছে। আমি একজন পুলিশ কর্মকর্তা হয়ো একাজ কিভাবে করবো।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ‘মামলা করার অধিকার সবার আছে। মামলা তদন্তের জন্য থানায় দেওয়া হয়েছে। আমি অনৈতিক কাজে জড়িত থাকলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রমাণ না হলে মানহানীর মামলা হবে।’

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মামলা,চাঁদাবাজি,ছাত্রনেতা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close