রাবি প্রতিনিধি

  ১৬ মার্চ, ২০২৩

রাবিতে সংঘর্ষ : তিন মামলায় আসামি ১১০০

ছবি : সংগৃহীত

তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে শুরু হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন মামলা হয়েছে, নাম উল্লেখ না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫০০, মতিহার থানা পুলিশ ৩০০ ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

এদিকে, সংঘর্ষ শুরুর ঘটনা জানতে যাকে নিয়ে সংঘর্ষ সেই আল আমীন আকাশের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও প্রতিবারই তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তার বন্ধুদের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে আকাশের বন্ধু আবদুল মতিন বলেন, ঘটনার পরে সে আত্মগোপনে আছে। আমরাও তার সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না।

অপরদিকে মূল ঘটনা জানতে বাসচালক ও মালিক শেরেকুলের বাড়িতে গেলে তাদেরও পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল নাম্বার চাইলে দিতে অস্বীকৃতি জানায় তার পরিবার। তবে কিছুক্ষণ পরে বাড়ি থেকে একজন বেরিয়ে এসে ঘটনার বর্ণনা করে বলেন, ওইদিন বাসে ক্যাম্পাস শিক্ষার্থী ও অন্য এক মহিলা পাশাপাশি বসেছিল। পথিমধ্যে আরেকটা মহিলা যাত্রী উঠলে দুজন মহিলাকে একসঙ্গে বসতে দিয়ে শিক্ষার্থীকে সামনের সিটে বসার অনুরোধ করা হয়। এটা নিয়ে হেলপারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে বিনোদপুর থেকে ওই শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জড়ো করে ড্রাইভারকে মারধর করে। তবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আসার সময় এলাকাবাসী জানান উনি নিজেই বাস মালিক শেরেকুল।

অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, ঘটনার শুরুতে আল-আমীন আকাশ ও তার বন্ধুসহ ১০-১৫ জন শিক্ষার্থীরা বাসচালক ও হেলপারকে মারধর করার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়।

পরে সেখানে গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে সরে আসতে বাধ্য হয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ কর্মীদের এই সংঘর্ষ সাধারণ ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ’ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ।

সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয় শর্টগানের পিলেটের আঘাতে। এদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীর এক চোখের দৃষ্টি আজীবনের জন্য নিভে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। কারো চোখের কর্ণিয়া নষ্ট হয়ে গেছে, কারো পাচকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে গেছে।

যাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তার আত্মগোপনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, তার আত্মগোপনের বিষয়টি আমাদের কাছে সন্দেহজনক। ছোট্ট ঘটনার সঙ্গে তার সহপাঠীদের সম্পৃক্ত করে কেন এত বড় সংঘর্ষে রূপ দিয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখা দরকার।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাবি,রাবিতে সংঘর্ষ,আসামি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close