রাবি প্রতিনিধি
রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে আহত ৫০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সংলগ্ন বিনোদপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের হামলায় ও ককটেল বিস্ফোরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও দুটি মোটরসাইকেলসহ পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে বহিরাগতরা।
শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। সিটে বসাকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে ঝামেলা হয় একজনের। পরে বাস বিনোদপুর বাজারে আসলে বাস আটকে ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে এক দোকানি এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে। পরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকে। এসময় দোকান ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। বাঁশ-লাঠি নিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এরপর শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আবার বিনোদপুর গেটের দিকে লাঠিসোটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের ধাওয়া করে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থল আসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার কয়েকজন অনুসারী। পরে স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে ঘটনাস্থলে থেকে বাইক রেখে চলে যান তারা। এসময় ৪টি বাইক ভাঙচুর করে স্থানীয়রা। পরে দুটি বাইকে আগুন দেয় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে মোহাম্মদ বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সাথে কথাকাটাকাটি হয় আকাশের। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এসে আবারো কন্টাক্টারের সাথে ঝামেলা বাধে। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়র মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড় হন এবং স্থানীয় দোকানদারে উপর চড়াও হন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া করেন। এসময় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলা চালায় স্থানীয়রা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতানা ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনাটি শুনেছি আমরা শিক্ষার্থী নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে। র্যাবও এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, বাস ভাড়াকে কেন্দ্র করে রাবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।