ঢাবি প্রতিনিধি
লীলা নাগের নামে ঢাবিতে পরীক্ষার হল
অগ্নিযুগের বিপ্লবী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগের নামে কলা ভবন পরীক্ষার হলের নামকরণ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) কলা ভবনের ৫ম তলায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘লীলা নাগ পরীক্ষার হল’-এর নামফলক উন্মোচন করেন।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরের সভাপতিত্বে ‘লীলা নাগ পরীক্ষার হল’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক জেরিন আলম বক্তব্য রাখেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯২১ সালে তিনি ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি সমাজ সংস্কারে আত্মনিয়োগ করেন এবং সামাজিক রূপান্তর ঘটানোর ক্ষেত্রে এক অনন্য ভূমিকা পালন করেন। নারী শিক্ষা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারীদের মাঝে সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি দীপালি সংঘসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। যা বাঙ্গালি নারী সমাজে ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করে। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং সমাজের অবহেলিত ও বঞ্চিত নারীদের উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। লীলা নাগের জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে আত্মপ্রত্যয়ী, উদ্যমী ও সাহসী নারী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য তিনি বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল ছাত্রীদের আর্থিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সহায়তা প্রদানের জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। নারীর প্রতি সামাজিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রযুক্তিগত নির্যাতন বন্ধে কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
উল্লেখ্য, লীলা নাগ ঢাকার আরমানীটোলা বালিকা বিদ্যালয়, কামরুন্নেসা গার্লস হাই স্কুল এবং শেরে বাংলা বালিকা বিদ্যালয় (তৎকালীন নারীশিক্ষা মন্দির) প্রতিষ্ঠা করেন। ভারত বিভাগের পর লীলা নাগ কলকাতায় চলে যান এবং সেখানেও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। লীলা নাগ ১৯০০ সালের ২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭০ সালের ১১ জুন মৃত্যুবরণ করেন।