পবিপ্রবি প্রতিনিধি :

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

পবিপ্রবিতে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) দ্বিতীয় ফটক সংলগ্ন রাস্তার দুপাশে তৈরি হয়েছে অঘোষিত গাড়ি পার্কিং স্পেস। এতে শিক্ষার্থীদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

পবিপ্রবির প্রথম ফটক এবং দ্বিতীয় ফটক দিয়ে সোজাসুজি অবস্থিত দীর্ঘ একটি রাস্তা রয়েছে। জানা যায়, রাস্তাটি দুমকি উপজেলা কর্তৃপক্ষের, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব রাস্তা না। লোকাল যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ তার সঙ্গে যাত্রী ওঠা-নামাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত রাস্তাটি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীদের দ্রুত সময়ে ক্লাসে কিংবা পরীক্ষা দিতে যেতে বিঘ্ন ঘটে এবং ক্লাস শেষ করে কিংবা পরীক্ষা শেষ করে একসাথে যখন শিক্ষার্থীরা বের হয় তখনও সমস্যা দেখা দেয়, এমনকি দুর্ঘটনারও সম্মুখীন হতে হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে যানজট কমানোর লক্ষ্যে গাড়ি পার্কিং বন্ধ এবং যাত্রী চাপ কমিয়ে শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে "সকল ধরনের যানবাহন পার্কিং নিষেধ " লিখিত সাইনবোর্ড লাগানো হয়। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, সাইনবোর্ড নামমাত্র স্থাপন করা হয়েছে। দিনে কিংবা রাতে সাইনবোর্ডের চারিদিকে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পার্কিং করা রয়েছে। সুষ্ঠু তত্ত্বাবধানের অভাবে নিষেধ থাকা সত্বেও যত্রতত্রভাবে গাড়িগুলো পার্কিং করেছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে, তারা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। এনএফএস অনুষদের শিক্ষার্থী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং এম.কেরামত আলী হলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস এবং পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গেইটের সঙ্গে যানবাহন পার্কিং করার ফলে আমরা নির্বিঘ্নে যাইতে পারি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, গাড়ি পার্কিং যদি বন্ধই না হয় তাহলে ওইখানে "সকল ধরনের যানবাহন পার্কিং করা নিষেধ" লেখা সাইনবোর্ড থাকাটা হাস্যকর এবং একইসঙ্গে দুঃখজনক।

পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক বলেন, গেইট সংলগ্ন গাড়ি পার্কিং করার বিষয়টা আমাদেরও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সমস্যাটা আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। বরাবরই পবিপ্রবি ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলো এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আমরা ইতিমধ্যেই চিন্তা করেছি ভিসি স্যার, রেজিস্ট্রার স্যার এবং প্রক্টর স্যারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা সমাধান করবো। আগামীকাল তো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে আমরা রবিবার অথবা সোমবার এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলবো এবং গাড়ি পার্কিং যেন বন্ধ হয় সেই বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, এখানে যানবাহন পার্কিং করায় শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে চলাচল ব্যহত হয় এবং বিভিন্ন সময় অটোচালকদের কাছে থেকে বিভিন্ন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনারও সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবস্থিত চলাচলের রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করা হয় না। আমরা পবিপ্রবি ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর। আমরা দ্রুত এ বিষয়ে কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমস্যাটা নিরসনের ব্যবস্থা করবো।

প্রক্টর প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, রাস্তাটি যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবস্থিত কিন্তু এটি পাবলিক রাস্তা, রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের। তবে এখানে গাড়ি পার্কিংয়ে শিক্ষার্থীদের চলাচলে সমস্যা হয় সেই দিক বিবেচনা করে আমরা সেইখানে "সকল ধরনের যানবাহন পার্কিং নিষেধ" লিখিত সাইনবোর্ড স্থাপন করেছি এবং কর্মরত আনসার সদস্যেরও বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য বলা হয়েছে কিন্তু লোকাল গাড়ি চালকরা বিষয়টা মানতে চায় না। মাঝে মধ্যেই দেখা যায় তারা আনসার সদস্যের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। আমি নিজেও অনেক সময় গিয়ে পার্কিংকৃত গাড়ি সরিয়ে দিয়েছি। বিশেষ করে বাজারের দিন সমস্যাটা বেশি হয়, তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাজার কমিটির সঙ্গে কথা বলেছি, বাজারের দিন গেইটটা বন্ধ রাখা যায় কি না। তবে এতে লোকাল মানুষরা সমস্যা তৈরি করে কারণ অনেক এ দূর-দূরান্ত থেকে বাজার করতে আসে। তারা রিকশা নিয়ে যেতে না পারলে রেগে যায়। তবে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছি দ্রুত সময়ে সমস্যাটা সমাধান হবে আশা করি।

পিডিএস/এএমকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পবিপ্রবিতে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা,পবিপ্রবি,যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং,ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close