অনশনে অজ্ঞান ঢাবি শিক্ষার্থী হাসনাত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক ভবনের (রেজিস্ট্রার বিল্ডিং) অব্যাবস্থাপনা নিরসনের দাবিতে অনশন শুরু করা শিক্ষার্থী হাসনাত দুর্বল হয়ে ঢলে পড়েছেন। উপাচার্য দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের সময় বেঁধে না দেয়া পর্যন্ত কিছু মুখে নেবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি।
এদিকে হাসনাতের ৮ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে বেলা ১১টায় মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ৷
হাসনাতের সঙ্গে থাকা আরমান হোসেন বলেন, ‘হাসনাত সেন্সলেস হয়ে পড়েছেন। গত রাত থেকে ওষুধ গ্রহণ করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে, কিন্তু ওষুধ গ্রহণ করেননি। এমনকি মেডিকেলেও যেতে চান না। সকালের দিকে প্রক্টরিয়াল টিম এসে তুলে দিতে চেয়েছে। আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেলের প্রধান অফিসার ডা. হাফেজা জামান হাসনাতকে দেখতে আসেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন। তিনি জানান, ‘হাসনাতের প্রেশার লেভেল হাই। এভাবে খোলা আকাশের নিচে বসে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ। করোনাও বাড়ছে, বৃষ্টিও হতে পারে; এভাবে যদি না খেয়ে সে থাকে, তাহলে তো তার শরীর খারাপ হবে। আমরা তাকে স্যালাইনও খাওয়াতে পারছি না।’
ঢাবি রেজিস্ট্রার ভবনে হয়রানি বন্ধের দাবিতে এবার আমরণ অনশনের ডাক হাসনাতেরঢাবি রেজিস্ট্রার ভবনে হয়রানি বন্ধের দাবিতে এবার আমরণ অনশনের ডাক হাসনাতের
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হাসনাত আমার সঙ্গে দেখা করেছিল। আমি অনেকক্ষণ ধরে তাদের সুন্দর করে বুঝিয়ে বললাম, এগুলো সবই প্রক্রিয়াধীন আছে। অনেকগুলো ডিজিটালাইজড করে ফেলা হয়েছে। অনেক কিছু সে জানেও না। তার উদ্দেশ্য সৎ হলে আমি বোঝানোর পর তো বোঝার কথা।’
অনশনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘সে ম্যাচিউরড ছেলে। আমাদের একজন গ্র্যাজুয়েট। সবকিছু বুঝেশুনে করা উচিত।’
তাঁর দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—প্রশাসনিক কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটালাইজড করা, শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন, সব অফিসরুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানসিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতামূলক করা ইত্যাদি।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনে আট দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তিনি। সে সময় তিনি উপাচার্যকে স্মারকলিপি এবং দাবি পূরণে ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। পরে দাবি পূরণ না হওয়ায় ফের গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। ১৯ সেপ্টেম্বর গণস্বাক্ষর কর্মসূচি এবং রেজিস্ট্রার ভবন নিয়ে অভিযোগ বক্সে শিক্ষার্থীদের ‘অভিযোগ’ নেন। উপাচার্যের কাছে গণস্বাক্ষর ও অভিযোগগুলো নিয়ে গেলে কোনো আশ্বাস না পেয়ে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নেন হাসনাত।