যশোর প্রতিনিধি

  ০৪ আগস্ট, ২০২২

সাবেক-বর্তমান একই ফ্রেমে

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের তানভীর ফয়সাল, সুব্রত বিশ্বাস ও এস এম শামীম হাসান একসাথে - প্রতিদিনের সংবাদ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোহেল রানা এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর ফয়সাল।

গত ৩১ জুলাই রাত ১১টায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্র্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এছাড়াও উক্ত মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম শামীম হাসান ও সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস।

সম্প্রতি যবিপ্রবি ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল, সাবেক সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক এস এম শামীম হাসানকে ঘনিষ্ঠভাবে ঘুরতে দেখা গেছে। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এছাড়াও কমিটি ঘোষণার পরদিনই (১ আগস্ট) তাদের সবাইকে একসাথে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সামাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে দেখা যায়। এছাড়াও সম্প্রতি একইসঙ্গে তাদের তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ছবিটিতে দেখা যায়, নবগঠিত কমিটির সভাপতি মো. সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল, সাবেক সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক এস এম শামীম হাসান (যশোর ৬) আসনের সংসদ সদস্য ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের ঢাকা অফিসে সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির পদবঞ্চিত নেতাদের সূত্রে জানা যায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নাঈমুল ইসলামকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই মামলার চার্জশিটভুক্ত ৩ নম্বর আসামিকে কীভাবে সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হলো। শুধু হত্যা মামলা নয়, ক্যাম্পাসে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ডাকাতি মামলার এজাহারেও তার নাম রয়েছে। এসব মামলায় তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। দ্বিতীয় বর্ষেই পাঁচ বছর ধরে রয়েছেন। তার মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের ছাত্রলীগের কমিটির পদ দিয়ে সংগঠনকে বিতর্কিত করা হয়েছে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদবঞ্চিত নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের বিরোধের জের ধরে ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাইমুল ইসলামকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নাইমুলের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে সিআইডি মামলাটির তদন্ত করে। মামলার তদন্ত শেষে ১১ জনের বিরুদ্ধ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আসামির তালিকায় ৩ নম্বরে তানভীর ফয়সালের নাম রয়েছে। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।

এ ছাড়া ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহীদ মসিয়ূর রহমান আবাসিক হলে তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানের নেতৃত্বে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তখন শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০০টি মুঠোফোন সেট, ১০০টি ল্যাপটপ, নগদ অর্থ ডাকাতি করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি থানায় ডাকাতির মামলা হয়। ওই মামলায় তানভির ফয়সালকে আসামি করা হয়েছে। একই সঙ্গে বর্তমান ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ পাওয়া আল মামুন শিমনের নামও ওই মামলার এজাহারে রয়েছে।

এ ছাড়া কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়া এস এম ইকরামুল কবির দ্বীপের ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা ও মাদক বিক্রেতার তালিকায় নাম রয়েছে। ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িক বহিষ্কারও করে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
যবিপ্রবি,কমিটি,ছাত্রলীগের কমিটি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close