পৃথক পৃথক দুই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছে দুই শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ছাত্রের নাম রাকিবুল হাসান। তিনি ২০১৮-১৯ সেশনে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগে অধ্যয়নরত আছেন। তিনি বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।

গত ১৫ মে রাকিবের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রথম অভিযোগটি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত রবিবার (১৫ মে) টিএসসিতে অবস্থানকালে একটি ছেলে অনেকক্ষণ ধরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমার আরও কাছে এসে অত্যন্ত অশালীন ও অভদ্র ইঙ্গিত দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি তার অশালীন আচরণের কারণ জানতে চাইলে উল্টো আমার ওপর চড়াও হয়ে নানা হুমকি দিয়ে চলে যান।

ওই শিক্ষার্থী অভিযোগে আরও জানান, আমি তাকে ক্যাম্পাসের ছাত্রী পরিচয় দিয়ে আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে অবহিত করলেও তিনি তার অবস্থান থেকে নিবৃত্ত হননি।

অন্যদিকে, পরদিন (১৬ মে) রাকিবের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে ওই শিক্ষার্থী রাকিবের হাতে যৌন হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, গত সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমি, আমার বন্ধু এবং বন্ধুর মা ঘুরতে আসি। বন্ধুর মা চলে যাওয়ার পর আমরা শিখা চিরন্তনের পাশে বসে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম। এসময় একটা মোটরসাইকেলে রাকিবসহ তিনজন ছেলে এসে আমরা ক্যাম্পাসের কি না জিজ্ঞেস করেন। পরে না বললে তারা আমার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে একপাশে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন, একপর্যায়ে আমাকে হয়রানি করেন। আমি চেঁচামেচি শুরু করলে তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যান।’

এদিকে দুটি অভিযোগই অস্বীকার করেছেন রাকিবুল হাসান। ১৫ মে টিএসসির ঘটনা সম্পর্কে অভিযুক্ত রাকিব বলেন, ‘এ ঘটনাটা ভুল বোঝাবুঝি। আমি আমার বান্ধবী মনে করে ওই আপুকে ডাক দিয়েছিলাম। এরচেয়ে বেশি কিছু নয়। পরে আমি ভুল বুঝতে পারি এবং আপুকে তখনই সরি বলি। আমি উনাকে উত্যক্ত কিংবা খারাপ কোনো কথা বলিনি।’

অন্যদিকে শিখা চিরন্তনের ঘটনা অস্বীকার করে রাকিব বলেন, ‘যে সময়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হচ্ছে সেসময় আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে ছিলাম। তাকে সময় দিচ্ছিলাম। এখানে আমার জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। আপুটি আমাকে কীভাবে চিহ্নিত করেছে সেটি আমি জানি না’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, টিএসসির বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আর উদ্যানের ঘটনার অভিযোগপত্রটি আমি এখনো পাইনি। তবে বিষয়টি জেনেছি। মেয়েটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার অভিযোগ রাখার কোনো সুযোগ নেই। মেয়েটিকে আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে , তিনি যেন তার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায় এবং প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়। আমাদের তরফ থেকে সহযোগিতা যা করার করবো।