নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নোবিপ্রবির ছাত্রী হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তি, নেই জেনারেটর
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) দুইটি ছাত্রী হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক রাখতে স্বতন্ত্র সংযাগ ব্যবস্থা কিংবা জেনারেটর সুবিধা না থাকায় নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সেমিস্টার ফাইনালের পড়ালেখাসহ রাতের বেলায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকী ৩ টি হলের জন্য জেনারেটর এর ব্যবস্থা থাকলেও এই দুইটি হলের জন্য বিকল্প হিসেবে নেই জেনারেটরের ব্যবস্থা। এমতাবস্থায় প্রায় প্রতিরাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানা গেছে। এমনকি মাঝে মাঝে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিভিন্ন সময়েই পড়তে হয় নানান সমস্যায়। এর মধ্যে দিনের বেলায় মাত্রাতিরিক্ত গরমের প্রকোপ দেখা যায়। রাতের বেলা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটেই যাচ্ছে। এমনকি সেমিস্টার ফাইনালে পড়াশোনা চালিয়ে যেতেও কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সম্প্রতি দেখা যায়, বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতে টানা ৪-৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে। এতে রাতের বেলায় পুরো হল জুড়ে অন্ধকারের রাজ্যে পরিণত হয়।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রী নাহিদা বলেন, হলে জেনারেটরের কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক বেশি কারেন্ট যায়। পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়। সেমিস্টারের মধ্যে অনেক সমস্যা হচ্ছে।
আরেক শিক্ষার্থী সালমা জানান, জেনারেটরের কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক বেশি কারেন্ট যায়। এই গরমে অবস্থা খারাপ। এতোবার কারেন্ট যাওয়ার ফলে পড়ালেখা এবং স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটে ।আরেকটি প্রধান অসুবিধা হচ্ছে ব্যবহারের পানির মান খারাপ। গন্ধ আসে পানি থেকে।
বঙ্গবন্ধু হলের আরেক শিক্ষার্থী মমতাজ বেগম জানান, জেনেরেটর সুবিধা নেই। জেনেরেটর না থাকার জন্য সন্ধ্যার পর অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। গতকালকেও সন্ধ্যার পর অনেকবার লোডশেডিং হয়েছিলো, পরীক্ষার সময় এমন পরিস্থিতিতে কি যে হয়!
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রভোস্ট মো. শাহিন কাদির ভুঁইয়া বলেন, আমাদের বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তথা নতুন জেনারেটর বসানোর কার্যকর প্রায় পাঁচ মাস আগে থেকেই চলতেসে। টেন্ডারও বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। এখন শুধুমাত্র যন্ত্রপাতির অপেক্ষা। আগামী দুই মাসের মধ্যে আশা করি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মাজনুর রহমান বলেন, সাধারণ এটা দীর্ঘ একটা প্রক্রিয়া। এতো সহজে কাজ শেষ হবেনা। প্রথমে সাব স্টেশন বসাতে হবে, পরে জেনারেটরের লাইন দেওয়া যাবে। তবে কাজটি প্রক্রিয়াধীন আছে। সাব স্টেশন বসালেই জেনারেটর সংযোগ দেওয়া হবে।
নোবিপ্রবির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এর ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের ৫০০ কেভিএ বিশিষ্ট জেনারেটর কেনার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এটি যুক্তরাজ্য থেকে ঠিকাদারির মাধ্যমে অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই এটি স্থাপন করে নতুন দুইটি হলে লাইন দেওয়া হবে।
নোবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, মেয়েদের দুইটি হলের জন্য জেনারেটর কেনা হয়ে গেছে। এখন শুধু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসে স্থাপন করা হবে। আশা করছি খুব শিগগিরই এটি স্থাপন করে সমস্যা সমাধান করা হবে।