শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২২

অনশন ভেঙে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনায় ‘না’

অনশন ভেঙে শিক্ষামন্ত্রীসহ কারও সাথেই আলোচনায় বসবে না বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ কথা বলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উপাচার্যের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাই অনেকে বলছেন অমানবিক। আমরা বাধ্য হয়ে কঠোর হয়েছি। পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে ভাবাটা খুবই বেদনাদায়ক। মৃত্যু ছাড়া সামনে আর কোন কর্মসূচি নেই।

শিক্ষামন্ত্রীর বার বার অনশন ভাঙার অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনশন কর্মসূচি থেকে আমাদের সরে আসার কোন সুযোগ নেই। একশত ঘণ্টার উপরে আমাদের সহযোদ্ধারা না খেয়ে আছে। একজন মানুষের জীবনের চেয়ে ভিসি পদটাই বড়। প্রয়োজনে মরবো, তারপরও অনশন ভাঙতে পারব না। অনশন ভেঙে কারও সাথেই আলোচনায় বসবো না।

শিক্ষামন্ত্রীদের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ভিসি শিক্ষার্থীদের উপর গুলি ছুড়তে পারে, বোমা মারতে পারে, তার পদত্যাগ ছাড়া আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না। আগে পদত্যাগ তারপর আলোচনা।

শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে নাদেল বলেন, এরইমধ্যে অনশনকারী ২৩ জনই অসুস্থ হয়েছেন। আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করেছি। অনশন ভেঙে আন্দোলন থেকে সরে আসার অনুরোধ করেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষার্থীরা আরও বেশি অবস্থান করলে অসুস্থ্যততা আরও বাড়বে। তিনি আলোচনার ব্যাপারে প্রস্তুত রয়েছেন বলেও শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন।

১৩ আগস্ট থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও সামনে আসে আন্দোলনে।

গত রবিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর টানা তিনদিন ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরব

১৯ জানুয়ারি বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করে ২৩ জন শিক্ষার্থী। রবিবার আরও পাঁচ শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেওয়ায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ২৮ এ।

চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল অনশন ভেঙে তিনদফা আলোচনার প্রস্তাব দিলে তাতে রাজি হয়নি শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া গত শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সাথে ফোনে আলাপ করে ঢাকায় গিয়ে দেখা করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শিক্ষামন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে এসে না হলে ভার্চুয়ালি আলোচনার প্রস্তাব দেয় শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে শনিবার মধ্যরাতে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে প্রায় ঘন্টাব্যাপী ভার্চুয়াল আলোচনা চলে। আলোচনা শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে তাদের দাবি ও লিখিত আকারে উপস্থাপন করার কথা বললেও এতে সাড়া দেননি শিক্ষার্থীরা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অনশন,শিক্ষামন্ত্রী,আলোচনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close