মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২২

ড্রাইভারের গাফিলতিতে হাবিপ্রবিতে ভর্তিচ্ছু ২১ শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ!

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি কার্যক্রম ছিল বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি)। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রিপোর্টিং কার্যক্রমে অংশ নিতে নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগ থেকে হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে ২১ শিক্ষার্থীর নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যায়। তারা এসে পৌঁছায় সোয়া ১২টায়। এতে করে স্বপ্নভঙ্গ হয় ২১ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বাসচালক ও সুপার ভাইজারের (শ্যামলী পরিবহন) গাফিলতির কারণে নির্ধারিত সময়ে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারেননি তারা।

শিক্ষার্থী ভর্তির নিমিত্তে সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হয় রিপোর্টিং কার্যক্রম। ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই রিপোর্টিং কার্যক্রম। এতে অংশ নেয় ৮৬২ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোস্তফা গালিব (অপেক্ষমাণ তালিকায় ১০১ সিরিয়াল) বলেন, হাবিপ্রবিতে ভর্তি হওয়ার জন্য খুবি, ইবি, শাবিপ্রবিতে ভর্তি হইনি। হাবিপ্রবির কৃষি অনুষদ আমার লক্ষ্য ছিল। বাসচালক যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করায় অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। তবে হাবিপ্রবি প্রশাসন মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য আমাদের মানবিক বিষয়টি বিবেচনায় নিলেন না। আমি কোনোভাবেই বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না। আমরাই নাকি জাতির ভবিষ্যৎ, তাহলে কেন মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না? আমরা এত দূর থেকে এলাম, কিন্তু কেউ বুঝল না আমাদের দুঃখটা। অথচ বাসে থাকা অবস্থায় সকাল ১১ টা থেকেই কর্তৃপক্ষকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছে। এমনকি হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জিএসটি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ছবি ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।

অশ্রুসিক্ত মারুফ ইসলাম (অপেক্ষমাণ তালিকায় ৮৮২ সিরিয়াল) বলেন, আমরা বুধবার বিকেল ৪টায় বাসে উঠার পরেও পৌঁছাতে পারলাম না। বাসায় গিয়ে বাবা-মাকে কী বলব? যেহেতু আমাদের দোষ ছিলো না, তাই কর্তৃপক্ষ চাইলেই বিষয়টি মানবিকতার খাতিরে আমলে নিতে পারত। আমরা সত্যিই জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে হতাশ। এখন পর্যন্ত অনেক টাকাই নষ্ট হলো, কিন্তু কোথাও ভর্তি হতে পারলাম না।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সব কিছু একটি নিয়মের মধ্য দিয়েই চলে। আমরা বেশ কয়েকদিন থেকেই শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞপ্তি, ম্যাসেজ কিংবা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমেও বিষয়গুলো ভর্তিচ্ছু প্রার্থীদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে এসেছি। তারপরেও এমন ঘটনা সত্যিকার অর্থে দুঃখজনক। আমরা চাই না এমন ঘটনা পরবর্তী সময়ে আবারও ঘটুক। আগামীতে যারা রিপোর্টিং কিংবা ভর্তি হতে আসবে, তারা সবাই যাতে নির্ধারিত সময়ের মাঝে ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছায়।

রিপোর্টিং কার্যক্রম শেষে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হয় (৭৮৭ জনের)। ফলাফল প্রকাশের পরপরেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় ছয়টি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে।

উল্লেখ্য, ২১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছে হাবিপ্রবি পড়ুয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। কালক্ষেপণ করে শ্যামলী পরিবহনের বাসটি ক্যাম্পাসে পৌঁছানোর কারণে ভর্তিচ্ছু প্রার্থীরা হাবিপ্রবির প্রধান ফটকের সামনে বাসের গ্লাস ভাঙচুর করেন বলে জানা যায়।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হাবিপ্রবি,শিক্ষার্থী,ভর্তি পরীক্ষা,শ্যামলী পরিবহন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close