দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অবসান ঘটতে যাচ্ছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি ) সংলগ্ন মেসের বিদ্যুৎ বিলের। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির পর ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাঁশেরহাট এলাকায় গড়ে উঠে মেস বাণিজ্য। বাজার এলাকায় মেসে শিক্ষার্থীরা বসবাস করলেও শিক্ষার্থীদের দিতে হতো বাণিজ্যিক রেটে বিদ্যুৎ বিল।

প্রায় দুই শতাধিক মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের থেকে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ করতো পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। একাধিকবার হাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও সুরাহা হয়নি সমস্যার। এতে করে বিপাকে পরে হাবিপ্রবিতে পড়ুয়া কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে বিল দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের আবাসিক বিলের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বিল দিতে হতো। অবশেষে হাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামানের হস্তক্ষেপে সমাধান হতে চলেছে সমস্যার।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ।

পরিচালক জানান, উপাচার্য শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা খুবই আন্তরিকতার সাথে আমলে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেসের বিদ্যুৎ বিল আবাসিকীকরণ কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মেসের তথ্যাদি পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। এর অংশ হিসাবে ইতিমধ্যে একটি ফরমে মেসসমূহের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে হাবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগ।

তিনি বলেন, অক্টোবর মাস থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা আবাসিক বিদ্যুৎ বিলের সুবিধা পাবে। এ ব্যাপারে মেস মালিকবৃন্দকে দ্রুত সময়ের মাঝে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবাসিক বিদ্যুৎ এর জন্য আবেদন করতে হবে পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহকৃত তথ্য সংগ্রহের ফরমটি যথাযথভাবে পূরণ করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগে জমা দিতে হবে। এরপর সকল মেসের তথ্য যাচাই বাছাই করে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগে তথ্য সরবরাহ করবে হাবিপ্রবি প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেস মালিক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ২০১২ সাল থেকে আকস্মিকভাবে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ আমাদের মেসগুলিকে বাণিজ্যিকীকরণ করে দেয়। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমরা মেস মালিকরাও বিব্রতকর অবস্থায় পরে যাই। বিভিন্ন সময় দফায় দফায় পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে আলোচনা করেও সমাধান হয়নি।

বিদ্যুৎ বিলের সমস্যার সমাধান হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোরসালিন মিয়া বলেন, বর্তমান উপাচার্য যে শিক্ষার্থীবান্ধব তিনি তা পুনরায় প্রমাণ করলেন। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ নয় বছর ধরে বিদ্যুৎ বিলের কাছে জিম্মি হয়ে ছিলো।

উল্লেখ্য, হাবিপ্রবি সংলগ্ন মেসগুলো বাণিজ্যিক মিটার হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এর প্রতিবাদ করে আসছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা।