শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় বছর পর খুলে দেওয়া হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান নিয়ে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সব আবাসিক হল। এতেই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে গোটা ক্যাম্পাস। সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আবাসিক হলে ফিরতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের গেট শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। হলের বৈধ পরিচয়পত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র এবং করোনার টিকা গ্রহণের প্রমাণপত্র দেখিয়ে হলে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তাদের ফুল, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, খাবার, চকলেট, হ্যান্ড ব্যাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত মাস্ক প্রভৃতি উপহার দিয়ে বরণ করে নেন হল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের টিভি রুমে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
এ সময় উপাচার্য বলেন, 'দীর্ঘ ৫৮৫ দিন পর সব হল খুলেছি। সব শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হলে উঠতে হবে। হলে ওঠার ক্ষেত্রে অবৈধ কোনো শিক্ষার্থীকে স্থান দেওয়া হবেনা। এই বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে মানা হবে। আমাদের হলগুলো হবে শিক্ষার্থীবান্ধব। শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হলগুলোতে পড়াশোনা করবে সে বিষয় আমাদের সুনজর রয়েছে।'
হল প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমেদ, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর, রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি আরও যুক্ত ছিলেন- শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান খান, সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবু সাইদ আরেফিন খান নোবেল, প্রথম ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিনসহ সহকারী প্রভোস্টবৃন্দ।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ পরাণ হল, সৈয়দ মুজতবা আলী হল, প্রথম ছাত্রী হল, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল পৃথক আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বরণ করেন।
এদিকে দীর্ঘদিন পর হলে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ ভূঁইয়া বলেন, 'দীর্ঘ দেড় বছর পর আমরা আমাদের আবাসিক হলে প্রবেশ করতে পারছি। বিষয়টা আমাদের জন্য অবশ্যই আনন্দের। হল কর্তৃপক্ষের সুন্দর ব্যবস্থাপনা আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা যারা হলে উঠেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো।'
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাবিহা সায়মন পুষ্প বলেন, 'এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম, অবশেষে পেলাম। এখন মনে হচ্ছে পৃথিবীটাও সুস্থ, সব স্বাভাবিক। হল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ সুন্দরভাবে আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য। অনেকদিন পর হলের বান্ধবী, সিনিয়র-জুনিয়রদের সাথে মিলিত হলাম।'
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমদিন শুধু স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করেন। এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার স্নাতক চতুর্থ বর্ষ, বুধবার তৃতীয় বর্ষ এবং বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করবেন।