শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
শিক্ষকের অপসারণ দাবি শিক্ষার্থীদের
রবির ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ায় পরীক্ষা বর্জন
প্রশাসনিক ভবনে তালা
শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককের অপসারণের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এবং শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিনের অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্লেকার্ড হাতে বিক্ষোভ করে। এছাড়া দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার অধ্যাপক আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সন্তোষজনক সমাধান দেয়া হবে।
অপরদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েকদিন আগে ক্লাস চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন শিক্ষার্থীদের চুল বড় রাখার বিষয়ে বকাঝকা করেন। তার ভয়ে সবাই পরদিনই চুল ছোট করে আসে।
পরে ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় অভিযুক্ত শিক্ষক কাঁচি হাতে দরজার সামনে দাড়িয়ে থাকেন। এসময় যেসকল শিক্ষার্থীর মাথার চুল হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা যায় তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন।
এঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই অপমানে ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে নাজমুল হাসান তুহিন নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় রাতে বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ভাংচুর চালায়।
পরে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা তাদের ফাইনাল পরিক্ষা বর্জন করে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানান। অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এ ঘটনায় দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আসেন অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার অধ্যাপক আব্দুল লতিফ। এসময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে বিচারের আশ্বাস দেন এবং বিষয়টি লিখিত আকারে অভিযোগ করার আহ্বান জানান। পরে প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীরা স্মারক লিপি দেন। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৈঠক শেষে আন্দোলনের পরবর্তী বিষয়ে ঘোষণা দিবেন শিক্ষার্থীরা।