রাবি প্রতিনিধি

  ২৩ জুন, ২০২১

রাবি ভিসির বাসভবনের সামনে 'অবৈধ' নিয়োগপ্রাপ্তদের অবস্থান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যের বাসভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে এডহক নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীসহ অন্যান্যরা। যদিও শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও ইউজিসি সে নিয়োগ অবৈধ উল্লেখ করে যোগদান স্থগিত রাখতে বলেছে।

মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে তারা এই নতুন কর্মসূচি শুরু করে। বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান নেয়া নিয়োগপ্রাপ্তরা সেখানেই ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে চাকরিতে পদায়ন ও সিন্ডিকেট সভা বন্ধে উপাচার্যের বাসভবনের প্রবেশপথে অবস্থান নেয় তারা। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রবেশপথে বসে ও শুয়ে পড়ে।

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. লিয়াকত আলী ও ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক মো. তারেক নূর ছাত্রলীগ নেতাদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেন নি।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও চাকরিতে পদায়ন না করা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা লাগাতার অবস্থানে থাকবেন। কোনোভাবেই তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াবেন না।

এদিকে চাকরিতে পদায়ন না করা পর্যন্ত সিন্ডিকেট সভা বন্ধে নিজেদের অবস্থানে অনঢ় থাকার ঘোষণা দেয় এডহকে নিয়োগপ্রাপ্তরা। পরে রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা তার বাসভবনের সামনে রাত সাড়ে ৮টায় সিন্ডিকেট সভা স্থগিত ঘোষণা করেন। এরপরও তারা সেখানেই অবস্থান করেন এবং রাত ১০টায় লাগাতার অবস্থানের নতুন কর্মসূচি শুরু করেন।

এদিকে একটানা অবস্থান নেয়ায় তাদের বেশ কয়েকজনকে অসুস্থ হওয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সেখানে অবস্থানকারী ছাত্রলীগ নেতা মাহাফুজ আল আমিন বলেন, "আমাদের একটাই দাবি আমাদের পদায়ন হোক। পরে যা হওয়ার হবে কিন্তু এখন আমাদের নিয়োগপ্রাপ্ত পদগুলোতে আমাদের যোগদান করতে দেয়া হোক।

গত পরশু মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ক্যাম্পাসে এসেছিলেন এবং প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছেন। তারপরও আমাদের নিয়োগের বিষয়টি সমাধান না করেই সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে। আমরা এজন্যই আন্দোলনে বসেছি।" যোগদানের বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে বলেন তিনি।

এডহক নিয়োগপ্রাপ্ত রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ডিলস বলেন, ‘সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান স্যার গত ৫ মে আমাদের ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ১২(৫) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এডহক নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা পরদিন ৬ মে রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে যোগদান করেছি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দিলেও বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিউৎসাহী হয়ে আমাদের নিজ নিজ দপ্তরে যোগদানের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

দেড় মাস ধরে বর্তমান রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা আশ্বাস দিয়েও আমাদের পদায়নের কোন ব্যবস্থা করেননি। ফলে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। দুঃশ্চিতায় ঘুমাতে পারছি না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের পদায়নের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে এখানেই মরে যাব, তবুও কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো না।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, গত ০৫ মে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ১৩৭ জনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে যান।

কিন্তু সে নিয়োগকে ওই দিনই ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর ৮ মে রুটিন উপাচার্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এডহক নিয়োগপ্রাপ্তদের পদায়ন (যোগদান) স্থগিত করেন।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাবি উপাচার্য,বাসভবন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close