মেহেদি জামান লিজন, জাককানইবি
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের রাস্তা যেন মরণফাঁদ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কোল ঘেঁষেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। প্রধান ফটক থেকে ৩.২ কি.মি. ভেতরে এ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের পরিবহন যাতায়াতের জন্য একমাত্র ব্যবহৃত সড়কের সংযোগস্থল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গতিরোধক ও সড়ক পারাপারের জন্য নেই কোনো ফুটওভার ব্রীজ। ঝুঁকি নিয়েই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবহন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র দুটি হল। ধারণক্ষমতা ৪৪০। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য একটি মাত্র ডরমেটরি, যেখানে মাত্র ৬০ জন থাকতে পারছেন। আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকতে হচ্ছে। সেই কারণে দেখা যায়, আবাসিক সংকটের দৃশ্য যার প্রভাব পরে পরিবহন পুলে। সেই সংখ্যার বড় অংশ ময়মনসিংহ শহর থেকে যাওয়া আসা করে। ময়মনসিংহ শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ২৫ কি.মি.। তাই নির্ভর করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থার উপর। ফটকের সামনে মহাসড়কে গতিরোধক ও ওভার ব্রীজ না থাকায় বড় দুর্ঘটনার আশংকায় আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ভুক্তভোগীরা।
২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর এই প্রধান ফটকের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী আসিফ ও মামুন। সে সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত গতিরোধক ও ওভার ব্রীজ নির্মাণের আশ্বাস দিলে আন্দোলন থেকে ফিরে আসে শিক্ষার্থীরা। দুর্ঘটনার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো গতিরোধক ও ওভার ব্রীজ দুটোর কোনোটিই দৃশ্যমান হয়নি। প্রতিনিয়তই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে সেখানে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মূল ফটকে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাতের পরিবেশে এই জায়গা হয়ে উঠে আরও ভয়ানক। ফটকের পাশেই ফেলা হচ্ছে বর্জ্য, সেই জায়গা আবার ব্যবহৃত হচ্ছে টয়লেট হিসেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক তবু রক্ষণাবেক্ষণে নেই প্রশাসনের নজর। অরক্ষিত ও অনিরাপদভাবেই পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসন, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান জানান, এই সমস্যাটিকে আমরাও সমস্যা হিসেবেই দেখছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করতে হবে আমাদের। তাই আমরা তৎপর আছি, এটি সমাধানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতর এবং স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে যতদ্রুত সম্ভব কাজটি বাস্তবায়নে কাজ করবো।
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ওয়েদুজ্জামান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মহাসড়কে ওভার ব্রীজ ও গতিরোধক করে দেওয়া জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিলো, পরে আমরা টেকনিক্যাল টিমকে চিঠি দিয়েছি। এখন তারা সরেজমিনে দেখার পরে কাজের অনুমতি দিয়ে ডিজাইনসহ ফান্ড দিলে আমরা কাজটি করে দিতে পারবো। কাজটি কতদিনের মধ্যে হতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি দ্রুত হওয়া দরকার, তবে কাজটি দ্রুত হবে কি না জানি না।
পিডিএসও/হেলাল