সম্পাদকীয়

  ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বাঙালির স্বপ্নপূরণের নির্ভীক কারিগর শেখ হাসিনা

ফাইল ছবি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছিল বাঙালি জাতি। আর তারই কন্যা সেই দেশকে নিয়ে গেলেন উন্নতির শিখড়ে। অবশ্য উন্নতির এই পথ পাড়ি দিতে তাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা ছাড়া মা-বাবাসহ পরিবারের প্রায় সব সদস্যকেই হারান। এ ছাড়া তিনি নিজেও কয়েকবার সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন : সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও। জেলে যেতে হয়েছে একাধিকবার। তা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র আর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের কালরাতের ভোরের দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির প্রাণ নিভিয়ে দিতে গুলি-বারুদণ্ডআর ধোঁয়ার সঙ্গে বাঙালি জাতিসত্তার যে হাহাকার ধ্বনিত হয়েছিল, সে খবর তখনকার পশ্চিম জার্মানিতে পৌঁছাতে বেশি সময় নেয়নি। ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে অবিশ্বাস্য সে খবর শুনে শোকস্তব্ধ শেখ হাসিনা তখনো আশায় ছিলেন, ঘাতকরা হয়তো তার পরিবারের অন্য সদস্যদের রেহাই দিয়েছে। অন্তত শিশু ভাইটি বেঁচে আছে। পরে স্পষ্ট হয়, কেউ বেঁচে নেই। ঘাতকরা ছোট ভাই শেখ রাসেলকেও বাঁচতে দেয়নি। শোকের সেই জগদ্দল পাথর সরিয়ে শেখ হাসিনা দীপ্ত প্রত্যয়ে পথ চলতে শুরু করেন। এরপর প্রবল বাধা ডিঙিয়ে শেখ হাসিনা ১৯৮১-এর ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন। তারপর মুজিবকন্যার একের পর এক ইতিহাস সৃষ্টি। দেশে ফিরে হাল ধরেন উপমহাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের। সেই থেকে চার দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রথম রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে। এরপর ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একজন সফল প্রধানমন্ত্রী। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল নির্মাণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

দেশের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি তিনি। আমাদের পক্ষ থেকে বাঙালির স্বপ্নপূরণের নির্ভীক কারিগর শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের অফুরান শুভেচ্ছা।

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শেখ হাসিনা,সম্পাদকীয়,জন্মদিন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close