সম্পাদকীয়

  ০৩ এপ্রিল, ২০২২

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

মুসলমানদের সংযম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম ফরজ ইবাদত হলো সিয়াম বা রোজা। দীর্ঘ ১১ মাসের প্রতীক্ষার পর রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের সওগাত নিয়ে সারা বিশ্বে মুসলমানের কাছে সাম্য, সৌহার্দ, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব, মানবিকতা, ত্যাগ, সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস এই পবিত্র মাহে রমজান।

বছর ঘুরে আসা পবিত্র মাহে রমজান মাসের শুভাগমনকে আমরা স্বাগত জানাই। বলার অপেক্ষা রাখে না, কু-প্রবৃত্তি দমন ও আত্মশুদ্ধির সর্বোত্তম মাস পবিত্র রমজান মাস। পুণ্যময় এই মাস রহমত, বরকত ও মুক্তির বার্তা নিয়ে আসে, হৃদয়কে প্রশান্ত করে। বিশ্ব মুসলিমকে সংযত-সুন্দর জীবনযাপনের শিক্ষা দেয়। মুসলিম নর-নারীর কাছে রোজার মাস অত্যন্ত কাক্সিক্ষত। মহান আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় মুসলমানরা শ্রদ্ধা ও নির্মল ভালোবাসায় বরণ করে এই মাসকে।

মহান আল্লাহ এই মাসের প্রতিটি দিন ও মুহূর্তকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন সংযম সাধনার জন্য। আর তাই পবিত্র এই মাসের মধ্যে নিহিত রয়েছে দুনিয়া ও পরকালের অশেষ কল্যাণ। আর এই পবিত্র মাসে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকাই নয়, এর পাশাপাশি তাগিদ দেওয়া হয়েছে জাগতিক সব বিষয়ে সংযত জীবনাচারের জন্য।

রমজানের শিক্ষা হলো সব ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং আত্মশুদ্ধি অর্জন করা। নিজের এবং অন্যের ওপর জুলুম করা, অপচয় করা থেকে বিরত থাকা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, পবিত্র রমজানে অনেকেই বেখেয়াল থাকেন। এ ছাড়া রোজার মাস এলেই দেখা যায় জিনিসপত্রের দাম হু-হু করে বেড়ে যায়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এই মাসে বেশি মুনাফার আশায় দাম বাড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

রমজানকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা প্রতি বছরের মতো এবারও সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। দাম এখন অনেকের কাছে দীর্ঘশ্বাসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়েই চলেছে। যাকে সামাল দেওয়া প্রশাসনের জন্য অনেকটা কঠিন বলে অনুমিত হচ্ছে। এটাই বাস্তবতা এবং বাস্তব চিত্র, যা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাই অযৌক্তিভাবে যাতে বেড়ে না যায় এ বিষয়টি কঠোরতার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদের। আমরা মনে করি, কিছু অনৈতিক মানুষের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে দাঁড়ানো একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সবারই ইতিবাচক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া দরকার। আর এই ভূমিকার নেতৃত্ব দিতে হবে সরকারকেই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রমজানের তাৎপর্য প্রত্যেকেরই গভীরভাবে উপলব্ধি করা এবং সেই মোতাবেক আমল করা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, সিয়াম সাধনার শিক্ষাজীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে এবং এর মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষাজীবনে প্রতিফলিত করতে হবে। তবেই ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। এক মাসের সংযম সাধনার ভেতর দিয়ে প্রত্যেকের জীবন পরিশুদ্ধ ও পবিত্র হয়ে উঠুক; সমাজ হয়ে উঠুক নান্দনিক এবং মানবিকতাপূর্ণ—এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খোশ আমদেদ মাহে রমজান,সিয়াম,রোজা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close