জিনাত জান কবীর

  ০৮ মার্চ, ২০২২

সাক্ষাৎকারে ভ্রমণকন্যা এলিজা বিনতে এলাহী

জাতিকে ইতিহাসচর্চায় এগিয়ে আসতে হবে

এলিজা বিনতে এলাহী একজন শৌখিন প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রাহক। একজন ভ্রমণপিয়াসী। সেই ১৯৯৯ সাল থেকে রাজধানীর বলধা গার্ডেন থেকে তার ভ্রমণযাত্রা শুরু। এমনিভাবে দেশ থেকে দেশান্তরে খুঁজে ফিরেছেন অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনার অভিলাষে। দেশের ৬৪ জেলায় ঘুরেছেন তিনি। এ ছাড়া ৪৯টি দেশ ভ্রমণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এলিজার নাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে তার অভিজ্ঞতা জানতে মুখোমুখি হয়েছেন প্রতিদিনের সংবাদের পক্ষে জিনাত জান কবীর

আপনার নাম এলিজা বিনতে এলাহী। কিন্তু এখন আপনি সবার কাছে ভ্রমণকন্যা এলিজা হিসেবে পরিচিত। এর পেছনের গল্পটা জানতে চাই।

ভ্রমণ আমার জন্য প্রথম ও শেষ ভালোবাসা। সেই প্রেমকে সজাগ রাখতে ভ্রমণ করছি ১৯৯৯ সাল থেকে, যা আমাকে ভ্রমণকন্যা হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে।

আপনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, একজন সহমর্মী স্ত্রী, একজন মমতাময়ী মা, একজন ভ্রমণপিয়াসী। এত কিছু পরিচয়ের মধ্যে কোনটিকে আপনি গুরুত্ব দেবেন?

প্রতিটি বিষয় আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমি প্রতিটি অবস্থানকে সমানভাবে ভালোবাসি। তারপরও নিজেকে ট্রাভেলার হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি ভালো লাগে। কারণ ভ্রমণ এখন আমার জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।

এত ব্যস্ততার মধ্যেও আপনি ভ্রমণের জন্য সময় বের করে নেন। এতে কী কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়?

প্রতিবন্ধকতা তো অনেক ছিল, পরিবার থেকে, সমাজ থেকে। একটি নারী ভ্রমণ করবে নিয়মিত সেটি আমাদের দেশে এখনো সেভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। পরিবারিক ও সামাজিক সব বাধা অতিক্রম করেই আজকে আমি একজন ট্রাভেলার, যা আমার কাছে পরম পাওয়া।

‘কোয়েস্ট : আ হেরিটেজ জার্নি অব বাংলাদেশ’ নামে আপনি একটি প্রজেক্ট করেছেন। এই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য ও আদর্শ কী জানতে চাই?

কোয়েস্ট আমার একটি নিজস্ব প্রজেক্ট। এই প্রজেক্ট আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে করা। বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় আমি এই প্রজেক্ট নিয়ে ঘুরেছি। কোয়েস্টের ট্যাগ লাইন হলো Baranding Bangladesh through Heritage Travel. এটির উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে হেরিটেজ ট্যুরিজম বা প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যটনের বিকাশকে উদ্বুদ্ধ করা। বিশেষ করে তরুণ সম্প্রদায় যাতে এই পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি সচল করতে পারে এবং সেই সঙ্গে দেশে পর্যটনশিল্পের উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারে। হেরিটেজ ট্যুরিজমের বিষয়টি আমি জেনেছি বিশ্বভ্রমণের মাধ্যমে। অন্যান্য দেশ এই উপায়ে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে, উদ্যোক্তা তৈরি করছে, আমরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে আছি। আর ভ্রমণের মাধ্যমে আমি নারীদের উৎসাহ দিতে চাই। আমাকে দেশে এবং দেশের বাইরে বসে যারা দেখছেন তারা যেন মনে করেন, বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ানোর জন্য একটি নিরাপদ জায়গা। কারণ আমি নিরাপদে ৬৪ জেলা একবার ঘুরেছি, দ্বিতীয় দফা ভ্রমণের কাজও চলছে আমার।

বাংলাদেশে পরিব্রাজক ইবনে বতুতা, হিউয়েন সাঙ, অনেকেই এসেছেন। তারা তাদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন বই। তাদের লেখা ভ্রমণকাহিনিতে জানা যায়, সে সময়ের আর্থসামাজিক অবস্থা। আপনার ভ্রমণকাহিনি নিয়ে লেখা ‘এলিজা’স ট্রাভেল ডায়েরি’ দু-খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। আপনার লেখা বই দুটোতে ভ্রমণকাহিনি ছাড়া অন্য কোনো বিষয় স্থান পেয়েছে কি?

আমার বই দুটি মূলত এশিয়া ভ্রমণ নিয়ে লেখা। ভ্রমণ গল্পের পাশাপাশি আমি আসলে দেখাতে চেয়েছি পর্যটিনশিল্পকে আমাদের পাশের দেশগুলো কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে। আমরাও কীভাবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। যেকোনো ভ্রমণ গল্পতেই সে দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ফুটে ওঠে।

বাংলাদেশ একটি প্রাচীন জনপদ। এই প্রাচীন জনপদে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কিন্তু বাংলাদেশের আর্দ্র আবহাওয়া এবং নদীর ভাঙনে এই নিদর্শনগুলো টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া অবহেলায়, অযত্নে নিদর্শনগুলো দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়? এ ব্যাপারে আপনার অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বলুন?

আমি ছোটবেলা থেকে ইতিহাসপ্রেমী, প্রত্নতত্ত্ব অনুরাগী। প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো তৈরির পেছনের মানুষের ভাবনা ও কারিগরদের দক্ষতাণ্ডকুশলতা আমাকে শুধু মানুষের সীমাহীন ক্ষমতার কথা মনে করিয়ে দেয়। এতে এক ধরনের শক্তি অনুভব করি আমি। আমার মনে হয় মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই, শুধু স্বপ্ন দেখাতে হবে। আমি আমার কাজের সঙ্গে সব সময় বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছি। শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে আমি এ যাবৎ ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও জাপানে ৮টি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিয়েছি। সেখানে বক্তা হিসেবে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছি যেমন- বাংলাদেশের ট্যুরিজম এবং বেগম রোকেয়ার অবদান।

বাংলাদেশের খুব কম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা আছে যেগুলো সাধারণের কাছে পরিচিত। দেখার উপযোগী বিভিন্ন জেলায় অল্প কিছুসংখ্যক স্থাপনা আছে, যা বহুল পরিচিত। আমি মূলত প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের প্রকাশিত বই, বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ারের বই এবং আবুল কালাম মোহাম্মদ জাকারিয়ার (যিনি দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ নিয়ে গবেষণা করেছেন) বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জেলাগুলো ঘুরছি। এমন কিছু স্থাপনার তথ্য আমি পেয়েছি, যা লোকচক্ষুর অন্তরালে আছে। এমনকি সেই জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সেই স্থাপনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায়ে তুলে ধরার পরও একই ধরনের ফিডব্যাক পেয়েছি। ‘হায় আল্লাহ। এটা আমার জেলায় আমি জানি না!’ উদাহরণস্বরূপ- ঠাকুরগাঁ জেলার গোরকুই কূপ (যা বাংলাদেশের একমাত্র বেলে পাথরের কূপ), নওগাঁ জেলায় জগদ্দল বিহার, দিনাজপুরের সীতাকোট বিহার (সেটি খনন করেছেন আবুল কালাম মোহাম্মদ জাকারিয়া), পঞ্চগড়ের ভিতর গড় (বাংলাদেশের একমাত্র দুর্গনগরী), গাইবান্ধা জেলার প্রাচীন বোগদহ বিহার, জয়পুরহাট পাথরঘাটা প্রাচীন নগরী, নওগাঁ জেলার দিবর দিঘি স্তম্ভ, ভীমের পান্টি, নীলফামারী জেলার ধর্ম পালের গড়, পটুয়াখালীর মসজিদবাড়ি, সৈয়দপুরের ফিদা আলি ইনস্টিটিউট, সিলেটের মেগালিথ স্তম্ভ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নওদা বুরুজ প্রভৃতি।

বিভিন্ন জেলার প্রাচীন ইতিহাসের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। জেলার প্রাচীন ইতিহাস অনেকেই জানতেন না। ৫ হাজার বছরের পুরোনো গাইবান্ধার রাজা বিরাট নগর, বরিশাল অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ গঠিত হয়েছিল ৫০ হাজার বছর আগে আর মানুষ বসতি স্থাপন করে ৩ হাজার বছর আগে, বিক্রমপুর জেলার নগর কসবা, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা ৩ হাজার বছর আগের প্রাচীন শহর, হবিগঞ্জের বানিয়াচং গ্রাম এই উপমহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ গ্রাম। এই তথ্যগুলো অনেকে জানেন না, আবার কেউ কেউ আবার ভুল তথ্য জানেন। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোও আমাদের হেরিটেজের অংশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোল সম্প্রদায় দেশের সবচেয়ে ছোট সম্প্রদায়। তা ছাড়া ঈশ্বরদীতে রয়েছে গুড়িয়া সম্প্রদায় যারা আমাদের ঐতিহ্যের অংশ।

বেশির ভাগ স্থাপনার অবস্থা খুবই শোচনীয়। তথ্য নেই, সংরক্ষণের অভাব রয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না। এগুলো সংরক্ষণে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া নেওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। যে উদ্যোগগুলো এ মুহূর্তে জরুরি—

ক. যেগুলো বেদখলে আছে সেগুলো দখল মুক্ত করা। খ. প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঠিক গবেষণার মাধ্যমে সংস্কার করা। গ. পর্যটন করপোরেশন সেগুলোকে দেখার উপযোগী করবে। ঘ. দক্ষ লোকবলের মাধ্যমে নিয়মিত পরিচর্যা। ঙ. স্থাপনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান এবং প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন (অনলাইন ও অফলাইন দুই পদ্ধতিতে)।

আপনি প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন দেখতে এবং সংগ্রহের কাজে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদকে তুলনামূলক আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করে থাকেন?

আমরা অবশ্যই পিছিয়ে আছি। কিন্তু সমৃদ্ধির কমতি নেই। মুঘল আমলে ঢাকা বিশ্বের ১২টি শহরের মধ্যে ছিল অন্যতম একটি। আমাদের সেই ঢাকা এখন অনেকটাই শ্রীহীন। এ রকম পুরো দেশেরই অবস্থা। সে ক্ষেত্রে আমাদের যা রয়েছে সেগুলো দেখার উপযোগী করা দরকার, প্রচার-প্রচারণা দরকার। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, এমনকি এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের দেশগুলোসহ ইউরোপের দেশগুলো ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটালাইজেশনকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছে।

বাংলাদেশে পাল আমলের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বৌদ্ধ বিহার। সেন আমলের মঠ-মন্দির, মুসলিম আমলের মসজিদ, ইংরেজ আমলের নীলকুঠি। এমনিভাবে কালে কালে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন নিদর্শন। এই নিদর্শনগুলো যদি জাতীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয় তাহলে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?

দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি পর্যটনশিল্পের মাধ্যমে তখনই বিকশিত হবে, যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা আমাদের দেশে আসবে।

বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সর্বত্র ছড়িয়ে আছে প্রত্নতত্ত্বের সমাহার। এগুলোর মধ্যে পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, ময়নামতী, ওয়ারী-বটেশ্বর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া রয়েছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত। প্রত্নতত্ত্বের সন্ধানে এখানে এসেছেন হিউয়েন সাঙ, ইবনে বতুতার বিশ্বপর্যটকরা। তাদের লেখায়, বর্ণনায় জানা যায় অতীত ইতিহাসের পটভূমি। সেই সোনালি দিনের প্রত্নতত্ত্বরাজিঘেরা বাংলাদেশ কী অবস্থায় আছে?

পর্যটনশিল্প আমাদের দেশে অবহেলিত। আলাদা হেরিটেজ ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করাই হয়নি। আমরা সাধারণভাবে পর্যটন বলতে পাহাড়, সাগরে ঘুরে বেড়ানোকে বুঝি। কিন্তু ঐতিহ্য ভ্রমণ সম্পর্কে আমাদের পরিবারে, সমাজে এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বলা হয় না। শিক্ষা সফরে আমরা সিলেট, কক্সবাজার, বান্দরবান ঘুরতে যাই। কিন্তু উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য দেখতে যাই না। আমি পুরো উত্তরবঙ্গকে হেরিটেজ জোন মনে করি। সর্বোপরি আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন দরকার। ভ্রমণশিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, সেটিও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বোঝাতে হবে।

বাংলাদেশে রয়েছে একটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। এরই মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বেশ কিছু খননকাজে সফলতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে নরসিংদী জেলার ওয়ারী-বটেশ্বর, ঢাকা জেলার সাভারের রাজাসন, মুন্সীগঞ্জ জেলার অতীশ দীপঙ্করের জন্মভূমি বজ্রযোগিনী গ্রামে খননকাজে বেরিয়ে এসেছে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো লুকায়িত রয়েছে এমন অসংখ্য নিদর্শন। এসব প্রত্ন অঞ্চলে খনন করা হলে বেরিয়ে আসবে অনেক অমূল্য প্রত্ন-রত্নরাজি। এ ব্যাপারে আপনার অভিপ্রায় জানতে চাই।

খননের সুবাদে কিছু কিছু সফলতা অবশ্যই এসেছে। কিন্তু কিছু কিছু স্থানে শুধু প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বোর্ড ঝুলতে দেখেছি শুধু। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংস্কারও সঠিকভাবে করা হয়নি। একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা গবেষণার মাধ্যমে সংস্কার করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কিছু কিছু প্রত্নস্থল সাদা রং করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় সংস্কারের নামে টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। এ রকম অনেক স্থাপনা রয়েছে, যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অধিদপ্তরের আওতায় এখনো আনা হয়নি। সব বিষয় সঠিক উপায়ে পর্যবেক্ষণ, নিরীক্ষণের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

একটি জাতির আত্মপরিচয় হলো তার ইতিহাস। সেই ইতিহাস যদি হারিয়ে যায় কিংবা জাতি যদি ইতিহাসবিমুখ হয়ে পড়ে তাহলে সে জাতি অন্ধকারে হারিয়ে যায়। তাই আমাদের হাজার বছরের সমৃদ্ধ বাঙালি জাতিকে ইতিহাসচর্চায় এগিয়ে আসতে হবে। সংরক্ষণ করতে হবে প্রাচীন নিদর্শন। কেননা, আমাদের আছে ময়নামতী, পাহাড়পুর, সাভার-ধামরাই-সুয়াপুর-নান্নার-ওয়ারী-বটেশ্বর। এসব বাঙালির গর্বের ধন। বাঙালি যুগে-যুগে, কালে-কালে গর্ব নিয়ে বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে চিরদিন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এলিজা বিনতে এলাহী,সাক্ষাৎকার,ভ্রমণকন্যা,ইতিহাস
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close