reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ মার্চ, ২০২১

বেসামরিক প্রশাসনে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে

অন্যান্য নারী কর্মকর্তাদের মতো বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান (সচিব) জাকিয়া সুলতানা ১৯৯১ সালে বেসামরিক প্রশাসন সার্ভিসে যোগদান করেন। কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়ার শুরু থেকেই মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে পরিবহন ও নিরাপত্তাহীনতার মতো নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

তবে, এখন বেসামরিক প্রশাসনের সবক্ষেত্রে এরূপ পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে এবং নারীরা ভালো কাজ করছেন। বেসামরিক প্রশাসনে তাদের অংশগ্রহণ দিনদিন বাড়ছে এবং নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

জাকিয়া সুলতানা তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, আমি ১৯৯১ সালে সহকারি কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলায় যোগদান করি। ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল মানবকল্যাণে কাজ করার। স্বপ্ন পূরণে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। আমার আন্তরিকতার জন্য আজ আমি এই অবস্থানে রয়েছি। কিন্তু, একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে আমার যাত্রাপথ মসৃণ ছিল না।

তিনি বলেন, সকল বাধা অতিক্রম করে নারীরা সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। এবং শুরু থেকেই মাঠ-পর্যায়ে নারী কর্মকতারা কাজ করছেন।

জাকিয়া সুলতানা বলেন, সম্প্রতি, শুধু প্রশাসনিক ক্যাডার নয় বরং সকল ক্যাডারে বহু নারী অংশগ্রহণ করছেন। তারা সহকারী ভূমি কমিশনারসহ মাঠ পর্যায়ের সব পোস্টে কাজ করছেন এবং তা ভালোভাবেই করছেন।

বেসামরিক প্রশাসনে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সার্ভিসে নতুনরা তাদের সততা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে বিশেষ করে বর্তমান সরকারের সময়ে বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নারীদের কাজের পরিবেশ উন্নত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলশ্রুতিতে, নারীদের কাজের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে এবং পুরুষ কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগিতা মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নারীরা আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম, উদ্যোগ, চেষ্টা, সততা ও একাগ্রতার মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে সকল বাধা অতিক্রম করে অবদান রাখতে চেষ্টা করছে।

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসী বেগম বলেন, এসিল্যান্ড, ইউএনও বা ডিসি হিসেবে বেসামরিক প্রশাসন সার্ভিসে মাঠ পর্যায়ে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে নারীরা এখন তাদের পুরুষ সহকর্মীর মতো সমান কর্মদক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে এবং নারী কর্মকর্তারা স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় কাজ করতে পাচ্ছেন।

নারীবান্ধব বেসামরিক প্রশাসন সার্ভিস গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রশংসা করেন ফেরদৌসী বেগম।

জাকিয়া ও ফেরদৌসীর মতো বেসামরিক প্রশাসন সার্ভিসের অনেক নারীই নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে নারীবান্ধব বেসামরিক প্রশাসন সার্ভিস গড়ে তুলতে বহু বাস্তবমুখী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় বেসামরিক প্রশাসনে বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৫ হাজার ৪৪৭ জনের মধ্যে এক হাজার ৪৪৭ জন নারী রয়েছে। যা ২৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। সূত্র আরও জানায়, ২০১৮ সালে এই হিসাব ছিল ২২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় পদে অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ১২ জন নারী সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব রয়েছেন। সূত্র : বাসস

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বেসামরিক প্রশাসন,নারী,নারী ক্ষমতায়ন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close