নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সিআইডি পরিচয়ে চিকিৎসককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পরিচয়ে সদ্য এমবিবিএস পাস করা শাকির বিন ওয়ালী নামে এক চিকিৎসককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শাকিরের বাবাও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন। তার নাম ডা. এ. কে. এম ওয়ালী উল্লাহ। তিনি বলেন, সিআইডি পুলিশ পরিচয়ে বাসা থেকে আমার ছেলেকে তুলে নেওয়ার তিনদিন পরও তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। রামপুরা থানা ও সিআইডিতে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার সন্ধান মিলছে না। এ বিষয়ে রামপুরা থানায় লিখিত অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নিচ্ছে না পুলিশ।

জানা জানা গেছে, শাকির বিন ওয়ালী ছাত্রজীবনে রেটিনা কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ওই কোচিং সেন্টারে পড়াতেন। তার বাবা ওয়ালী উল্লাহ ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিফ) সহ-সভাপতি। এই সংগঠনটি ইসলামি ও ডানপন্থি ঘরানার চিকিৎসকদের।

শাকিরের বাবা বলেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকেল তিনটার দিকে সিআইডি পরিচয়ে সিভিল পোশাকে চারজন ব্যক্তি আমার বাসায় প্রবেশ করেন। আমি তখন পেশাগত কাজে বাসায় ছিলাম না। শুধু আমার স্ত্রী, কন্যা ও ছেলে বাসায় ছিল। পরে সদ্য এমবিবিএস পাস করা আমার ছেলে ডা. শাকির বিন ওয়ালীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। আমার স্ত্রী তাদের নাম-পরিচয় জানতে চাইলে তারা শুধু বলেছেন, ‘আমরা সিআইডির লোক’।

রাতে আমি বাসায় এসে রামপুরা থানায় যোগাযোগ করি। তারা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান পুলিশ। লিখিত অভিযোগ বা জিডি করতে চাইলে রামপুরা থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম মাওলা একটি নোট বুকে সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো লিখে রাখেন। কিন্তু জিডি নেননি। পরে পুলিশ বলেছে- মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করতে। আমি এরপরই সিআইডিতে যোগাযোগ করি অথচ কোনো সন্ধান মেলে নি।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ওইদিন (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে আরও ৪/৫ জন লোক বাসায় আসে। তারাও নিজেদের সিআইডি পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে আমার ছেলের রুম তল্লাশি করে তার একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। তখনও তাদের নাম-পরিচয় ও মোবাইল নম্বর জানতে চাইলে শুধু বলেছেন- ‘আমরা সিআইডির লোক’।

পরদিন সকালে সিআইডির মালিবাগ অফিসে যান ডা. এ. কে. এম ওয়ালী উল্লাহ। তিনি বলেন, সিআইডি মালিবাগ কার্যলয়ের রিসিপশন থেকে কোনো দিচ্ছে না তারা।

সদ্য চিকিৎসক শাকিরকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়া ব্যাপারে জানতে চাইলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে জানাবো।’

কোথাও ছেলের সন্ধান না পেয়ে সোমবার দুপুরে রামপুরা থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলার কাছে যান ডা. ওয়ালী উল্লাহ। ছেলের সম্পর্কে জানতে চেয়ে এবং তুলে নেওয়ার ব্যাপারে জিডি করতে চান তিনি। তবে পুলিশ জিডি নিচ্ছে না বলে দাবী করেন শাকিরের বাবা।

শাকির বিন ওয়ালী কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে ২০২০ সালে এমবিবিএস পাস করেন। বর্তমানে তিনি এফসিপিএস করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ বিষয়ে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতে খোঁজ করলে হয়তো শাকির বিন ওয়ালীর সন্ধান পেতে পারে তার পরিবার। আমাদের কাছে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ আসে নাই বলেও দাবী করেন ওসি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রামপুরা,চিকিৎসক,সিআইডি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close