reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ জুন, ২০২২

জুরাইনে পুলিশের ওপর হামলায় ৪৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টো পথে আসা মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।

ওই ঘটনায় আটক তিনজনের নাম উল্লেখ করে মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে শ্যামপুর থানায় আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট মো: আলী হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামপুর থানার ওসি মফিজুল আলম।

মামলায় উল্লেখ করা আসামিরা হলেন- আটক মোটরসাইকেলের চালক বার্তা বিচিত্রা নামক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সোহাগ-উল ইসলাম রনি, তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশান ভূঁইয়া ও শ্যালক ইয়াসির আরাফাত ভূঁইয়া।

ওসি মফিজুল আলম বলেন, জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাকে উদ্ধারে আসা আরও দুই পুলিশ সদস্যকেও মারধর করা হয়।

আহত সার্জেন্ট আলী হোসেনের হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক উৎপল চন্দ্র।

মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে জুরাইন রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে।

পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনায় ভাংচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১১। বুধবার আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছেন শ্যামপুর থানার ওসি।

এ দিকে মঙ্গলবার দুপুরে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখারুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, সকাল পৌনে ১০টার দিকে জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসছিল একটি মোটরসাইকেল। তাতে এক নারীসহ দুজন আরোহী ছিলেন। কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন কাগজপত্র দেখতে চাইলে মোটরসাইকেলচালক অত্যন্ত দুর্ব্যবহার শুরু করেন। পোশাক ও অন ডিউটিতে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্টের পরিচয়পত্র দেখতে চার্জ করেন মোটরসাইকেলচালক। পরে দুজনকে পুলিশ বক্সের নেওয়া হলে সঙ্গে থাকা নারী উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন।

তখন আশপাশে থাকা সুযোগ সন্ধানী লোকজন নারী লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলে সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ বক্সে ভাংচুর চালায়। অভিযুক্ত মোটরসাইকেলচালক সার্জেন্টের বুকের ওপর পা তুলে চেপে বসেন। এ সময় ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার মধ্য থেকে একজন সার্জেন্টের হাতে ছুরিকাঘাত করেন। সার্জেন্টকে উদ্ধারে আসা পুলিশের এক এসআই ও এক কনস্টেবলকে বেধড়ক মারধর ও ধাওয়া করা হয়। পরে শ্যামপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে।

আহত তিন পুলিশ সদস্যের মধ্যে সার্জেন্ট আলী হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে।

অন্যদিকে ঘটনার সূত্রপাতের পরপরই জুরাইন রেলগেট পুলিশ বক্সের ভেতরে ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করে সোহাগ-উল ইসলাম রনি বলেন, ঘুষ নেওয়ার সময় তিনি উপস্থিত হলে পুলিশ সদস্যরা তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। পুলিশ বক্সে এনে মারধর করে। পরে উত্তেজিত জনতা পুলিশ বক্সে হামলা করে ও পুলিশ সদস্যদের মারধর করে।

এ নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানে একটি ছোট ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে অনেকেই বলছেন, হয়রানির প্রতিবাদে জুরাইনের স্থানীয়রা পুলিশ সদস্যদের মারধর করেছেন।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়ারী ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, উল্টো পথে একজন নারীকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালানোর সময় চালককে থামাতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হামলা,মামলা,পুলিশ,জুরাইন,ঢাকা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close