মহাসড়কে তাদের ডাকাতির অন্যতম অস্ত্র লেজার লাইট
মহাসড়কে ডাকাতি করার জন্য একটি চক্রের সদস্যরা অন্ধকার রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকতেন। পূর্ব পরিকল্পিত নির্ধারিত স্থানের নিকটবর্তী স্টেশনে টার্গেট বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস সম্পর্কে সংকেত দিতেন ডাকাত দলের সদস্যরা। সংকেত পাওয়া মাত্রই চক্রের অন্য সদস্যরা দ্রুত গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে রাখতেন। পরে চালক ও যাত্রীদের অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়ে পালিয়ে যেতেন তারা। যেখানে গাছ কাটার সুযোগ থাকতো না সেখানে চালকের চোখে লেজার লাইটের তীব্র আলো ফেলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডাকাতি করতেন ডাকাত দলের সদস্যরা। এমন অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (৪ জুন) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার (৩ জুন) রাতে ঢাকার সাভার থানার বালিয়ারপুর মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র সর্দারসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র মূল হোতা মো. শামিম ওরফে সব্দুল (৩০), মো. আনিসুর রহমান ওরফে ঠান্ডা (৪৫), মো. সালাউদ্দিন (২৩), মো. ইখতিয়ার উদ্দিন (৩১), মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫), মো. জাহাঙ্গীর সরকার (৪০), মো. সজিব ইসলাম (২৫), মো. জীবন সরকার (৩৪), শ্রী স্বপন চন্দ্র রায় (২১), মো. মিনহাজুর ইসলাম (২০) ও শ্রী মাধব চন্দ্র সরকার (২৬)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি পাইপগান, দুটি ওয়ান শুটারগান, ছয় রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি চাপাতি, দুটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, দুটি টর্চ লাইট, দুটি হ্যাক্সো ব্লেড, একটি দা, দুটি লেজার লাইট ও একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, এ চক্রের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধির ওপর নজরদারি করে মূল ডাকাত দলের কাছে তথ্য সরবরাহ করত। এসব ডাকাতির ঘটনায় শামীম ও আনিসুর ওরফে ঠান্ডা একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জেল হাজতে থাকার সময় তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন অপরাধীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে জামিনে বের হয়ে তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন। তাদের বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৫ জন।
তারা যে এলাকায় ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে ওই এলাকার স্থানীয় অপরাধী, মাদক কারবারি, পরিবহন শ্রমিক ও নৈশ প্রহরীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্পর্ক গড়ে তোলে বলেও দাবি র্যাবের।