সালিসে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর ভ্রুণ নষ্টের সিদ্ধান্ত, মীমাংসা হলো যতো টাকায়
বিয়ের প্রলোভনে ২২ বছরের এক তরুণীকে একাধিবার ধর্ষণ করার অভিযোগ ফেলা মাতুব্বর নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই তরুণী বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অতি সম্প্রতি এ ঘটনাটি স্থানীয় মাতুব্বররা মাত্র দুই লাখ টাকায় মীমাংসা ও তরুণীর গর্ভে থাকা সন্তানকে নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষণের শিকার তরুণীকে উদ্ধার করে তার গর্ভের সন্তানকে বাঁচানোর জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত মো. ফেলা মাতুব্বর (৩০) সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারাণদিয়া গ্রামের বাকা মাতুব্বরের ছেলে। ফেলা মাতুব্বর বিবাহিত। তবে কোনো সন্তান নেই। আর ধর্ষণের শিকার হওয়া তরুণী উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বাসিন্দা। নারাণদিয়া গ্রামের তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তিনি দেশের বাইরে থাকেন।
আরও পড়ুন : তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ও স্বজনরা মিলে কাটল সাবেক স্বামীর পুরুষাঙ্গ
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়র বাড়িতে তার স্ত্রীর কাছে মাঝে মাঝে থাকতেন ওই তরুণী। ওই বাড়িতে থাকার সুযোগে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে ফেলা মাতুব্বর। এতে ওই তরুণী এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালী নূরুল ইসলাম মাতুব্বর, আবুল খায়ের, বকুল মাতুব্বর ও সায়েম মোল্লাকে ম্যানেজ করে ওই তরুণীর আত্মীয়-স্বজনকে মীমাংসার জন্য চাপ দেয় অভিযুক্ত ধর্ষকের পরিবার। পরে পাশের কুমারপট্টি গ্রামে ওই তরুণীর খালু নান্নু মোল্লার বাড়িতে বসে সম্প্রতি দুই লাখ টাকার বিনিময় ঘটনাটি গোপনে মীমাংসা করে দেওয়া হয়। এছাড়াও সালিসে গর্ভের সন্তানকেও নষ্ট করার সিদ্ধান্ত দেয় প্রভাবশালীরা। মীমাংসার পর থেকে তরুণী তার গর্ভের সন্তান নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর ফেলা মাতুব্বর বিদেশে চলে গেছেন বলে দাবি করেছে পরিবার। তবে সালিসে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশ এলাকাবাসী। অন্তঃসত্ত্বাকে উদ্ধার করে তার গর্ভে থাকা সন্তানের জীবন বাঁচানোর জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন : বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা শোনেনি ভারত
মীমাংসার বিষয়টি স্বীকার করে সালিশে থাকা প্রভাবশালীরা বলেন, আমরা সালিসে উপস্থিত ছিলাম স্থানীয়ভাবে। তবে কত টাকা মীমাংসা হয়েছে তা আমরা জানি না। এটা ওই তরুণীর খালু নান্নু বলতে পারবেন। তবে এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার তরুণীর খালু নান্নুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সালথা থানার ওসি মো. আশিকুজ্জামান বলেন, নারাণদিয়া গ্রামের এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
ফরিদপুরের সালথা-নগরকান্দা সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।