সবুজ হোসেন, নওগাঁ
প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসে খুন হলেন প্রেমিক
নওগাঁয় প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসে হামিম হোসেন নামের এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান আসামি বখাটে আসিফ হোসেন সজলকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের পারিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদরের মুরাদপুর গ্রামের হামিম হোসেন রাজশাহী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও প্রাণ কোম্পানিতে চট্টগ্রামে চাকরি করেন। গত সোমবার চট্টগ্রাম থেকে নওগাঁয় চাচাতো ভাই সাব্বির রহমানের বিয়েতে আসেন। ওই দিন দুপুরে নওগাঁ শহরের রুবির মোড়ে হামিমের প্রেমিকা আনিসা আনির সাথে দেখা করতে যায়। শহরের চকমুক্তার এলাকার বাসিন্দা ও নওগাঁ সরকারি মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল মোজাম্মেল হকের ছেলে আসিফ হোসেন সজলের (২৯) নেতৃত্বে তার সহযোগী সুরুজ (২৬), প্রান্ত হোসেন (২৭)-সহ অজ্ঞাত আরও পাঁচজন মিলে মারপিট ও ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এরপর নির্যাতনকারীরাই হামিমকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর হাসপাতাল থেকে হামিমের পরিবারকে বিষয়টি জানালে পরিবারে লোকজন হাসপাতালে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী নিয়ে যেতে বলেন। এরপর পরিবারের সদস্যরা হামিমকে রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মারা যায়।
নিহত হামিম হোসেনের বাবা শাহাদত হোসেন বলেন, আমার ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিল হামিম। আনিসা আনি নামে একটি মেয়ের সাথে আমার ছেলে দেখা করতে যায় শহরের রুবির মোড়ে। এ সময় হামিমকে বখাটে আসিফ হোসেন সজলসহ কয়েকজন মিলে ইট ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এরপর আমার ছেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারাই হামিমকে হাসপাতালে এনে ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর হাসপাতালের একজন কর্মী ফোন দিলে আমরা দ্রুত চলে যাই হাসপাতালে। তারপর হাসপাতালের ডাক্তার জানান, প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ ও শরীরের অনেক স্থানে মারাত্মক জখম হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে আজ ভোর ৫টার দিকে সে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় মামলা করেছি। আমি আমার ছেলেকে হত্যার কঠিন শাস্তি দাবি করছি। আর যেন কোনো বাবা-মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, মূলত আনিসা নামের মেয়েটির সাথে প্রেমের সম্পর্কজনিত কারণে ব্যর্থ হয়েই বখাটে আসিফ হোসেন সজলের নেতৃত্বে হামিমের ওপর হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে। ঘটনাটি ঘটার পর আনিসা ও তার পরিবারের লোকজনও পলাতক রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
পিডিএসও/হেলাল