কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীতে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন শ্বশুর নুর কবির (৪৫)। ঘটনায় ছুরিকাহত শাশুড়ি নুর জাহানকে (৪০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ভারুয়াখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মশরফ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক জামাই মিজানুর রহমান (২৮) পলাতক রয়েছেন। তিনি একই ইউনিয়নের বানিয়া পাড়ার গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। নিহত নুর কবির পেশায় কাঠমিস্ত্রি।

ভারুয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ও প্যানেল চেয়ারম্যান বর্তমান ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ফজলুল হক স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহের কারণে বাপের বাড়িতে চলে যান স্ত্রী জেরিন আক্তার। এ বিরোধের জেরে কৌশলে বাড়িতে গিয়ে শ্বশুরকে খুন করেন জামাই মিজানুর রহমান।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নুর কবিরের মেয়ে জেরিন আক্তারের সাথে দেড় বছর আগে মিজানুর রহমানের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ছয় মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

মিজান প্রবাসে ছিলে। দেশে ফিরে স্ত্রীকে দেওয়া ৭ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করে দেন। এগুলো শেষ হলে স্ত্রীকে বাপের বাড়ি হতে টাকা এনে দেওয়ার জন্য নির্যাতন করতে থাকেন। নির্যাতন সইতে না পেরে জেরিন তার গরিব কাঠমিস্ত্রী পিতার কাছ থেকে এক লাখ টাকা এনে দেন। এরই মধ্যে মাদকসেবন ও জুয়ার আসরে মেতে ওঠেন মিজান। আবারও বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ দেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। স্ত্রীকে প্রচুর মারধর করেন। নিরুপায় হয়ে বাপের বাড়ি চলে যান জেরিন। তাতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে রাতের আঁধারে শ্বশুর বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত করে শ্বশুর ও শাশুড়িকে।

স্থানীয়রা শ্বশুর ও শাশুড়িকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আনলে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শ্বশুর নুর কবির মারা যান।

শাশুড়ি নুর জাহানের সারা শরীরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মাসুম খান।

পিডিএসও/হেলাল