নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ আগস্ট, ২০২০

বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস

আগস্ট মাস শোকের মাস। এ মাসেই জাতি হারিয়েছে তার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এ মাসেই বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে, দুই পুত্রবধূ এবং তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ স্বজনদেরও হারিয়েছে জাতি। বাঙালি জাতি হিসেবে সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা ও নিজস্ব ভূখণ্ড। বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশ একইসূত্রে গ্রথিত—একটি অন্যটির পরিপূরক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি দেশকে বিপরীত স্রোতে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। পাকিস্তানি ভাবধারা পুনঃগ্রথিত করার প্রয়াসে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পুরোনো মূল্যবোধকে পুনরুজ্জীবিত করার অপচেষ্টা চালায়।

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপদানকারী হিসেবেই কেবল ননরক্তের সম্পর্কেও তিনি জাতির জনক। দীর্ঘদিন, বছরের পর বছর খুনিরা দেশ-বিদেশে বীরদর্পে বিচরণ করেছে বটে; কিন্তু খুনিদের বিচারের দাবি এ দেশের মানুষের মন থেকে কখনই উবে যায়নি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার জাতির জনকের হত্যাকারীদের বিচার করছে। বঙ্গবন্ধু যে জাতি বিনির্মাণ করেছেন, সেই জাতি আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার করবে না এমনটি ছিল কল্পনারও অতীত। কিছু সুবিধাভোগী কুচক্রী মানুষের ইনডেমনিটির মতো ঘৃণ্য অধ্যাদেশের, ঘৃণ্য সিদ্ধান্তের দায়ভার পুরো জাতি বহন করতে পারে না। খুনিদের বিচার ও সাজা প্রদানের মাধ্যমে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।

জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল ইতিহাসের অংশই নন, বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসেও তিনি কালের বরপুত্র। বঙ্গবন্ধুর জীবনের সঙ্গে বাঙালি জাতির উত্থান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেমন অবিচ্ছেদ্য, তেমনি বিশ্বের নিপীড়িত, বঞ্চিত ও শোষিত মানুষেরও তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণা।

তিনি ছিলেন বাংলার মুকুটবিহীন সম্রাট। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বস্তরের জনসাধারণ তার কথা শুনতেন এবং মেনে চলতেন। বঙ্গবন্ধুর কথাকে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ আইন হিসেবে মনে করত। প্রকৃতিগতভাবেই মানুষের মধ্যে যেমন আইন মেনে চলার প্রবণতা আছে, তেমনি আছে আইন অমান্য করার সংস্কৃতিও।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে জাতির অগ্রযাত্রায় সবাই শামিল হয়েছেন। অথচ কী পরিতাপের বিষয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতি সেই নেতাকে হারিয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাঙালি জাতির অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিরা নিশ্চয়ই ভেবেছিল, এদেশ থেকে স্বাধীনতা পক্ষীয় রাজনীতি অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতি চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাবে। ইতিহাস তাদের সেই ধারণাকে ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করেছে। উপরন্তু ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে খুনিরা নিজেরাই ইতিহাসে খলনায়ক হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ইতিহাসের মহানায়ককে হত্যা করে কখনই নায়ক হওয়া যায় না ইতিহাস আবারও সেই সত্য প্রমাণ করল। বাঙালি শোককে শক্তিতে পরিণত করতে শিখেছে। জীবিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেয়ে শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক শক্তিশালী।

’৭৫-পরবর্তী স্লোগান ‘এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে’ বাংলার আকাশ-বাতাসকে কাঁপিয়ে উদ্ভাসিত করত বাঙালিকে। মানুষের মনের ভেতর যে বঙ্গবন্ধু শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ঠাঁই করে নিয়েছেন, তাকে উৎখাত করার শক্তি ও সামর্থ্য কারো নেই। এজন্যই বঙ্গবন্ধু জাতির কাছে অমর ও চিরঞ্জীব।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রেরণা,বঙ্গবন্ধু,শোকাবহ আগস্ট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'WHERE news_id=228481' at line 3
Error!: SQLSTATE[23000]: Integrity constraint violation: 1062 Duplicate entry '228481' for key 'news_hits_counter.news_id'