নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ আগস্ট, ২০২১

আজ জাতীয় কবি নজরুলের প্রয়াণ দিবস

বাংলা সাহিত্যের অনন্য রূপকার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় একদিকে ছড়িয়ে আছে বিদ্রোহের দাবানল, অন্যদিকে প্রেমময়তা। লিখেছিলেন, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য’। সংগীতে সৃষ্টি করেছিলেন অনন্যধারা। দিয়েছিলেন নিত্যনতুন রাগরাগিণী আর শব্দের ব্যঞ্জনা।

একই সঙ্গে তিনি অসাম্প্রদায়িক ও মানবতার কবি। আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম প্রয়াণ দিবস। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জাতীয় কবির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম আজীবন ছিলেন আপসহীন। দৃঢ়কণ্ঠে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। তার ‘বিদ্রোহী’ কবিতা তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দাবানল ছড়ায়। কবিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দি হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দি দেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে দেওয়া ওই জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দির জবানবন্দি নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে।

সেই জবানবন্দিতে নজরুল বলেছেন, ‘আমার ওপর অভিযোগ, আমি রাজবিদ্রোহী। তাই আমি আজ রাজকারাগারে বন্দি এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত।... আমি কবি, আমি অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত।’ তিনি আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন, তখন (১৯২৩ সালের ২২ জানুয়ারি) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। এ আনন্দে জেলে বসে নজরুল ‘আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ কবিতাটি রচনা করেন।

কবির জীবনকাল ৭৭ বছরের। ১৯৪২ সালে অসুস্থ হয়ে বাকশক্তি হারানোর আগ পর্যন্ত তিনি সৃষ্টিশীল ছিলেন। তার হাতে সৃষ্টি হয়েছে গান, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, ছোটগল্পসহ অসংখ্য রচনা।

১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। তাকে দেওয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় কবিকে।

কর্মসূচি : আজ ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন কবির ভক্ত ও অনুরাগীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। সকালে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা জানানো হবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও। সকালে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও থাকছে ফাতেহা পাঠ ও আলোচনা। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আজ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রয়াণ দিবস,জাতীয় কবি,কাজী নজরুল ইসলাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close