‘মেমেসাহেব’ খ্যাত জনপ্রিয় সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য আর নেই। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বৃহস্পতিবার দুপুরে টালিগঞ্জের বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তিনি বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। বাংলায় জনপ্রিয় লেখক বলতে যা বোঝায়, নিমাই ভট্টাচার্য ছিলেন আক্ষরিক অর্থে তা-ই। তার লেখা উপন্যাসের সংখ্যা ১৫০ এরও বেশি। ১৯৩১ সালে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার, অধুনা বাংলাদেশের মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শরশুনা গ্রামে জন্মালেও পরে পশ্চিমবঙ্গেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন জনপ্রিয় লেখক নিমাই ভট্টাচার্য।

দেশভাগের পর তিনি কলকাতায় চলে আসেন। প্রথম জীবনে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। কলকাতায় সাংবাদিকতা শুরু করলেও পরে দীর্ঘ ২৫ বছর দিল্লিতে সাংবাদিকতা করেন নিমাই ভট্টাচার্য। এই পেশায় থাকার সুবাদে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন সেই সময়কার রাজনৈতিক মহল এবং একই সঙ্গে গ্ল্যামারের দুনিয়াকে। সেই অভিজ্ঞতা ছায়া ফেলে তার গল্পে-উপন্যাসে। তার প্রথম গ্রন্থ রাজধানীর নেপথ্যে প্রকাশিত হয় ১৯৬৪ সালে। পরে লেখালেখিকেই পুরো সময়ের পেশা হিসেবে নেন। উপন্যাস, ছোট গল্পের বাইরে নিমাই ভট্টাচার্য লিখেছেন বিপ্লবী বিবেকানন্দ’র মতো বইও। মেমসাহেব, এডিসি, রাজধানী এক্সপ্রেস, গোধূলিয়া, একের পর এক উপন্যাসে এক সময়ে বাঙালির অন্দরমহলকে মাতিয়ে রেখে ছিলেন সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য। ১৯৭২ সালে তার উপন্যাস থেকেই নির্মিত হয় পিনাকী মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি মেমসাহেব।

উত্তমকুমার, অপর্ণা সেন অভিনীত সেই ছবি আজও বাংলা সিনেমার রোমান্টিক পর্বের মাইলফলক। তার তিন পুত্র ও দুই কন্যা বর্তমান। স্ত্রী ও আরও দুই মেয়ে আগেই প্রয়াত হয়েছেন।