গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় বাঁধ ভেঙ্গে ৭ ইউনিয়ন প্লাবিত
এলাকাবাসীর টানা ৪-৫ দিন আপ্রাণ চেষ্টাতেও শেষ রক্ষা হলোনা গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জের বালুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। সেখানে বালুর বস্তা ফেলে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। এমন কি সারারাত জেনারেটরে আলো জ্বালিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেও বিফল হন তারা। শুক্রবার ভোররাতে বাঙ্গালী নদীর এ বাঁধটি ধ্বসে গেলে প্রবল বেগে পানি ঢুকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার দুটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এ সময় প্রবল ¯্রােতের মুখে কেবল বালুয়া গ্রামেই দুই শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ধান, আখ সব্জীসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। পানি ঢুকে পড়ে মানুষের বাড়িঘরে, তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার ভোর রাতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বালুয়া এলাকায় বাঙ্গালি নদীর এই বাধটি ভেঙ্গে যায়। মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান জানান, প্রায় চার বছর আগে এই এলাকায় বাঙ্গালী নদীর তীর প্রতিরক্ষা বাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর লোকালয়ে পানি প্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয়রা একটি বাঁধ নির্মাণ করে। পানির প্রবল চাপে বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ায় গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ, কোচাশহর, শালমারা, শিবপুর, রাখালবুরুজসহ ৫টি ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার সোনাতলা ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুইটি ইউনিয়নে পানি ঢুকে পড়ে। এতে কয়েক হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত, আখের ক্ষেত, শাক সবজি সহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। ভোররাত থেকেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে সাধ্যমত উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ তৎপরতা চালায়। দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ এলাকার সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল, পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সেনাবাহিনীর একটি টিমও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, গত ৪-৫বছর ধরে শত আবেদনেও বাঁধটি মেরামত না হওয়ায় এ সমস্যা এখন নিয়মিত রূপ ধারন করেছে। প্রতি বছর বন্যা এলেই এলাকার লোকজন প্রাণপন চেষ্টা করে এটিকে রক্ষা করতে হয়। এবার সকল প্রচেষ্টা বিফল হয়ে এলাকার বিপুল ক্ষতি হয়ে গেলো।
পিডিএসও/রানা