রেজওয়ান শরিফ, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে পাট চাষে লাভবান কৃষকরা
এক সময়ে পাট চাষ থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়া টাঙ্গাইলের চাষীরা এখন আবার নতুন করে পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন পণ্যের মোড়কে পাটের বস্তা বাধ্যতামূলক করায় দেশীয় বাজারে পাটের চাহিদা বেড়েছে। অপরদিকে বিশ্ব বাজারেও এর চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। ফলে লাভের আশায় কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন পাঁট চাষে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হাতিলা, পয়লা, ঘারিন্দা, সারুটিয়া, কুইজবাড়ী, ছোটবাসালিয়া, গালা, পিচুরিয়া, কাগমারা, কৃষ্ণপুর, সদুল্যাপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায় পাট চাষের বিশাল সমারোহ। কোথাও কোথাও গৃহিনীরা পাঁট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত। আবার কোথাও দেখা যায় চাষীদের পাট ধোয়ার কর্মযজ্ঞ। কারো যেন দম ফেলার ফুরসৎ নেই। এসময় কথা হয় তাদের সাথে।
হাতিলা গ্রামের পাট চাষী কদ্দুস মিয়া বলেন, ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। হাল চাষ, সার ও শ্রমিক বাবদ ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ২০-২৫ হাজার টাকা আয় হবে।
সারুটিয়া এলাকার আজগর মিয়া বলেন, এক সময় পাট চাষ করে বছরের পর বছর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তাই পাট চাষ বাদ দিয়েছিলাম। এখন শুনেছি দেশে-বিদেশে এর চাহিদা বেড়েছে। বাজারে বেশ দামও পাওয়া যায়। তাই নতুন করে পাটের আবাদ শুরু করলাম।
পাট চাষ করতে তেমন কষ্ট করতে হয়না। আবার বর্ষার যে সময়টাতে কৃষক বসে থাকে তখন পাট চাষের উপযুক্ত সময়। অন্যদিকে পাট চাষ করে অন্য ফসলগুলো সময়মতো পাওয়া যায়। তাই পাট চাষ করে বছরে অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা মেলে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলায় ২০ হাজার ১৩৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল। পাট উৎপাদন হয়েছিল, দুই লাখ তিন হাজার একশ’ ছত্রিশ হেক্টর বেল্ট। এবছর ২০ হাজার দুইশ আটাশ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ নয় হাজার আটশত ষোল বেল্ট।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু আদনান বলেন, আগে কৃষকরা বোরো ধান চাষ শেষে জমি পতিত রাখতো। পরে রোপা আমন ধান চাষ করতো। বর্তমানে এই প্যাটার্ন পরিবর্তন করে সরিষার পরে বোরো ধান চাষ করছেন। এর পর জমি পতিত না রেখে পাঁট চাষ এবং পরে আবার রোপা আমন ধানও চাষ করছেন। এতে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। জমির যথাযথ ব্যবহার হয় এবং কৃষকরাও লাভবান হয়।
পিডিএসও/রিহাব