মাজহারুল ইসলাম মিশু, হালুয়াঘাট
হালুয়াঘাটে ২ গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের আওতায় কড়ইকান্দা ও বড়খালের পাড় ২টি গ্রামে অবৈধ বিদ্যুতের লাইনের সন্ধান পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, নিজস্ব সেচের ডিপ মেশিন থেকে বের করেছেন চোরাই লাইন। আর তা থেকে ছড়িয়েছে ব্যাঙের ছাতার ন্যায় দুইগ্রামের প্রতিটি ঘরে। প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে সাব-মিটার। ৫ টাকা ইউনিটের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা গুনছেন ১২ টাকায়। ভ্যাটসহ তা ১৬ টাকায় গিয়ে পড়ে এমন তথ্যও পাওয়া যায় ভুক্তভোগিদের কাছ থেকে। আর এ অবৈধ লাইনের নেপথ্যে রয়েছেন স্থানীয় তিনহোতা সঞ্চু মেম্বার, সাজাহান ও ইমাম উদ্দিন (তোলা) সহ পল্লীবিদ্যুতের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা। যাদের যোগসাজসে বছরের পর বছর চলছে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনের রমরমা ব্যবসা। মাস গেলেই ভুক্তভোগিদের কাছ থেকে নকল গ্রাহক সাজিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। যার নূন্যতম বৈধতা নেই বলে পল্লী বিদ্যুতের হালুয়াঘাট অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
পল্লী বিদ্যুতের এ কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে প্রতিদিনের সংবাদ অনলাইনকে জানান, এদেরকে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে। সাদা কাগজে মুচলেকাও দিয়েছে যে আর এ ধরনের অবৈধ বিদ্যুৎ তারা ব্যবহার করবেনা। তারপরেও তারা তা করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, অনতিবিলম্বে এ ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। গ্রাম গুলোতে ঘুরে দেখা যায়, বড়খালের পাড় গ্রামের আঃ বারেক (দোকানদার), হালিমা, আবুবকর, মোস্তফা, রফিকুল, জহীর, আকরাম, হযরত, আঃ রাজ্জাক, লিয়াকত আলী, গিরেন্দ্র দাস, মলিন্দ্র দাস, রবিন্দ্র দাস, আঃ হাই সহ কয়েক শতাধিক বাড়িতে সাব মিটার দিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ১২ টাকা ইউনিট ধরে বিল উত্তোলন করে চলছেন এই অসাধু চক্রটি।
জানা যায়, সঞ্চু মিয়ার এ অবৈধ পন্থাটি চলছে ৬-৭ বছর যাবৎ। পাশাপাশি সাজাহানের লাইনটিও সমান গতিতে চলছে। ইমাম উদ্দিন (তুলা) তিনিও কয়েক মাস যাবৎ এই ব্যবসাটি শুরু করেছেন। এ সমস্ত লাইনের বিষয়ে গ্রাহকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, এ লাইনগুলো ডিপমেশিন থেকে দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ১২ টাকা ইউনিট ধরে হিসাব করে বিল নিচ্ছেন এই তিনজন। সাথে ভ্যাটের টাকাও দিতে হয়। এছাড়া কেউ যদি সারামাসে কোন বিদ্যুৎ না পুড়েন তাহলে মিনিমাম চার্জ রয়েছে, যা গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হয়। এ নিয়ে কথা বললে এ অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন সরবরাহকারী সঞ্চু মেম্বার বলেন, অনেকটা জনসেবার স্বার্থেই ডিপ মেশিন থেকে লাইন বের করে পাড়ায় ছড়িয়েছেন। কিছু মসজিদ মাদ্রাসায় বিনামূল্যেও দিয়েছেন। শতাধিক বাড়িতে তিনি বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছেন এমনটি অস্বীকার করে বলেন, এ লাইন চালানোর জন্যে তাকে কয়েকবার জরিমানা দিতে হয়েছে। তারপরেও তিনি তা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযুক্ত সাজাহান বলেন, কিছু লাইন তিনি দিয়েছেন তবে তা সংখ্যায় নগন্য। এ সমস্ত লাইনের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন বলে তিনি জানান। ইমাম উদ্দিন তুলা বলেন, নিজেদের আত্বীয় স্বজনদের কিছু বাড়িতে লাইন দিয়েছি তবে তাদের কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন টাকা নেওয়া হয়নি।
পিডিএসও/রিহাব