রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে!
রংপুরে আশংকাজনক হারে বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। মাদকাসক্তদের মধ্যে যুব ও তরুণের সংখ্যা বেশি। এতে করে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষনা অব্যাহত রয়েছে। রংপুর পুলিশের পক্ষ থেকে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রংপুরে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ গত ৭ মাসে মাদক দ্রব্য আইনে প্রায় ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে জলে হাজতে পাঠিয়েছে। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩শ’টির অধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে।
রংপুর কোতয়ালী থানার ওসি এবিএম জাহিদুল জানান, রংপুরে মাদক বিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। রংপুর পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পিপিএম রংপুরে মাদকের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষনা করেছেন। পুলিশের উদ্যোগে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। যারা এতে সারা দেবেন তাদের পুনর্বাসন করার উদ্যেগ নেয়া হয়েছে।
রংপুর নগরীতে একাধিক মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র গড়ে ওঠেছে। শহরে মাদকাসক্তদের সুস্থ জীবনে ফিরে আনার জন্য সচেতনামুলক কাজ করছে একাধিক বেসরকারী সংস্থা। এমনি একটি সংস্থা ‘স্বপ্ন’। ওই সংস্থার এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, নগরীতে প্রায় ২৫ হাজরের অধিক মাদকাসক্ত রয়েছে। এদের মধ্যে ২৩ ভাগ রয়েছে নারী। তারা যে সমস্ত মাদকাসক্ত যুবক-যুবতীদের নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন তাদের সংখ্যা উদ্বেগজনক। মাদকাসক্তদের বেশিরভাগই ১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সের শিশু, যুবক-যুবতী।
রংপুরে মাদকাসক্তরা গাঁজা, হেরইন, ফেন্সিডিল, ইনকটিন, টকসি, সিডিল, ইফিড্রিন, ইয়াবা মাধ্যমে নেশা করে থাকেন। মাদকাসক্তদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, পারিবারিক অশান্তি, বেপরোয়া জীবন যাপন, কৌতুহল বশতঃ মাদক গ্রহন, প্রণয় ঘটিত বিচ্ছেদ, কর্মক্ষেত্রের সংকটসহ নানাবিধ কারনে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। রংপুরে ৪০টি মাদক বিক্রিয় কেন্দ্র থেকে ১শ’১৫টি ছোট ছোট মাদক দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রে মাদক দ্রব্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে। শহরের পৌর এলাকায় রংপুর মেডিকেল হাসপাতাল ক্যাম্পাস, মেডিকেল পুর্ব গেট, বিসিক শিল্প নগরী, কেরানী পাড়া চৌ-রাস্তা মোড়, টার্মিনাল, পাবর্তীপুর, হনুমানতলা, জেলা পরিষদ অফিস চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় তা বিক্রি করা হয়। মাদক বেচা কেনার সাথে নারী ও শিশুদের ব্যবহার করা হয়। নবাবগঞ্জ,হিলি,লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, নাগেরশ্বরী, রামখানা সীমান্ত পথে মাদক দ্রব্য ঢুকছে রংপুরে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, একই মাদক ব্যবসায়ী একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে জামিন নিয়ে এসে আবারও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন। তারা রংপুর নগরীকে মাদক দ্রব্য কেনা বেচার ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন।
পিডিএসও/রানা