চকরিয়া প্রতিনিধি

  ২৪ জুলাই, ২০১৭

ভারী বর্ষণে ফের বন্যার কবলে চকরিয়া-পেকুয়া

ভারী বর্ষণে ওজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও প্লাবিত কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া। প্রবল বর্ষণ ও ভারী বৃষ্টিপাতে চকরিয়া পৌরসভার বেশির ভাগ নীচু এলাকা এবং পেকুয়া উপজেলা পানিতে তলিয়ে গেছে। মাতামুহুরী নদীতে লামা আলীকদম উপজেলার পাহাড়ি ঢলের পানি বেড়ে গিয়ে লোকাল প্লাবিত হয়েছে। রোবাবার থেকে এ অবস্থার কারণে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা আবারও বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। অপরদিকে বৃষ্টির পানিতে উপজেলা ও পৌরসভার নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ার কারণে স্বাভাবিক চলাচল যেমন ব্যাহত হচ্ছে পশাপশি বাড়ছে জনদুর্ভোগ।

চকরিয়া পৌরসভা মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পৌর শহর রক্ষা বাঁধটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। আগের দুই দফা বন্যার তান্ডবে চকরিয়া পৌরশহর রক্ষাবাঁধ ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া পয়েন্টের বেড়িবাঁধ চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় বালির রাস্তা পাইলিং করে ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে কোনপ্রকার নদীর ভাঙ্গন থেকে বেড়িবাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

রোববার সারদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কারণে উপজেলায় নতুন করে বন্যা শুর হয়। এতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে চকরিয়া পৌর শহররক্ষা বাঁধ ও ঘুনিয়া পয়েন্টের বেড়িবাঁধ। এ অবস্থার কারণে ভাঙনের কবলে পড়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হলে যে কোন মুহুর্তে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পাবে। বর্তমান পরিস্থিতি ভেদে নদীর তীরবর্তী সহস্রধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

রোববার রাত ১১টার দিকে প্রায় বাড়িতে হাটু পরিমাণ পানি ভিতরে প্রবেশ করেছে বলে স্থানীয়রা জানান। বর্ষণ অব্যাহত থাকার কারণে সোমবার সকাল থেকে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নীচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়ক ডুবে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে জনসাধারণ।

চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক, চিরিঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার, কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার ও বিএমচর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, রোববার সকাল থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকার কারণে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে আবারও পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে শুরু করেছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকার কারণে উপজেলায় ফের ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম বলেন, আগের দুই দফা বন্যার তান্ডবে চকরিয়া পৌরশহর ও বিভিন্ন ইউনিয়ন চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সে বন্যার ক্ষত এখনো শুকিয়ে যেতে না না যেতেই ফের বন্যার সম্মুখীন হল চকরিয়াবাসী। এ অবস্থায় চকরিয়া উপজেলা পরিষদ বন্যা ও জনসাধারণের দূর্ভোগ মোকাবেলায় যথেষ্ট সচেতন রয়েছে, পাশাপাশি ত্রাণ তহবিল ও মজুদ রাখা হয়েছে। এরইমধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়নের প্রতিনিধিকে জনগণের পাশে থেকে বন্যা মোকাবেলায় তাগিদ দেওয়া হয়েছ।

এদিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত ইসলাম রাজু বলেন, ওজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী, বারবাকিয়া শিলখালী দিবাগত রাত থেকে পানির অভ্যন্তরে নিমজ্জিত। এমনিতেই পেকুয়া উপকূলীয় এলাকা, বর্তমানে ভারী বৃষ্টিপাত ও ওজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত। নিন্মাঞ্চলের ঘরের চাল ছোয়া অবস্থা, জনসাধারণের দূর্ভোগের যেন সীমা নেই। এপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দূর্যোগ মোকাবেলায় ও বন্যাপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকল পদক্ষেপ আমরা হাতে নিয়েছি এবং সার্বক্ষণিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ সমন্নত রাখছি।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভারী বর্ষণ,বন্যা,চকরিয়া,পেকুয়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist