আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর
রংপুরে পানিবন্দি ৪৫ হাজার পরিবার
তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রংপুরের ৩ উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নের ৪৫ হাজার পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। তিস্তার ডান তীরে ফাটল দেখা দিয়েছে । আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষজন। সরেজমিনে বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গঙ্গাচড়ায় ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার , পীরগাছায় ৩টি ইউনিয়ন প্রায় ১০ হাজার পরিবার , কাউনিয়ার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে ।
গঙ্গাচড়ায় তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, গজঘন্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে।পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষজন। পানিবৃদ্ধির সাথে সাথে আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান দোলাপাড়া, হাজীপাড়া ও কোলকোন্দ ইউনিয়নের সাউদপাড়া এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। আলমবিদিতর ইউপি চেয়ারম্যান আফতাবুজ্জামান জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকান দোলাপাড়ায় ১০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের ঘর বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। নোহালী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ টিটুল বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নোহালী ইউনিয়নের প্রায় ৫শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পীরগাছায় উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ২০ টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া, শিবদেবচর, আমিনপাড়া, চর ছাওলা কামারের হাট, রামসিং, জুয়ানের চরসহ প্রায় ১০টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামগুলোতে অবস্থিত প্রায় ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় তা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়াও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের চর তাম্বুলপুর, নামাচর, চররহমতসহ ৬টি ও কান্দি ইউনিয়নের সতন্ত্ররা , দোয়ানি মনিরাম, তেয়ানি মনিরাম এবং দীঘটারি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধের পীরগাছা পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের ৩ কিলোমিটার অংশ হুমকির মূখে পড়েছে বর্তমানে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে খাদ্য সামগ্রী ও বিশুদ্ধ পানি নিজ উদ্যোগে সংগ্রহ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে বন্যা দূর্গত এলাকার লোকজন জানায়।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বন্যা দূর্গত এলাকার মানুষের জন্য শুকনা খাবার ও ত্রানের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে বন্যা দূর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এদিকে, কাউনিয়ার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। কাউনিয়ার উপজেলার চর গদাই, গুপিডাঙ্গা, প্রাননাথচর, চর ঢুসমারা, হয়বত খাঁ, চর গনাই, টাপুর চর, আজম খাঁ, হরিচরন শর্মা গ্রামে তিস্তা নদীর পানি ঢুকে বন্যা কবলিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। সেই সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা ঘাট ভেঙ্গেগেছে, তলিয়ে গেছে বীজতলা। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। বন্যা কবলিত এলাকা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাহাফুজার রহমান মিঠু পরিদর্শন করে ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে বন্যা কবলিত মানুষেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
পিডিএসও/রানা