নাজমুল সাঈদ সোহেল, চকরিয়া

  ২৭ এপ্রিল, ২০১৭

মাতামুহুরী ব্রিজের বেহাল দশা, দেখার কেউ নেই

যৌবন আর প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে বার্ধক্যের ভারে জর্জরিত, হাঁটুতে ফাঁটল আর শরীরে নানান ক্ষত নিয়ে মরণ-পীড়ায় আক্রান্ত। ১৯৬০ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা মাতামুহুরী নদীর উপর তিন’শ মিটার লম্বা ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে অদ্যবদি বেশ কয়েকবার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করলেও সাড়া মেলেনি কতৃপক্ষের।

ইতোমধ্যে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের বেশ কয়েকবার কক্সবাজার সফর করেন। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চলাচল এই সেতুর উপর দিয়ে অতিক্রম করেন। বলা যায় এই সেতুর উপর নির্ভরতায় চলাচল লোকজনের সংখ্যা দক্ষিণ চট্টগ্রামের সমগ্র জনসাধারণ।

জেলা শহরের প্রায় ২২লাখ মানুষের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন ব্রিজটি দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যানবাহন যাতায়ত করছে। এই জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে লবণ, মাছ, তরিতরকারি, সবজি, শুটকী, আসবাবপত্রসহ নানা রকম পণ্য পরিবহনে এ ব্রিজই হচ্ছে একমাত্র ভরসা। নানা কারণে মাতামুহুরী ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ, যাত্রীবাহী বাস, শতশত মালবাহী ট্রাক, মিনি ট্রাক, নসিমন, করিমন, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, ভ্যান গাড়ি ইত্যাদি চলাচল করে।প্রতিদিন অসংখ্য ছাত্রছাত্রী স্কুল কলেজ মাদ্রাসা যাতায়াত করেন এই ব্রিজের উপর দিয়ে।। ৬-৭ বছর ধরে ব্রিজের মাঝখানে ক্ষত ঢেকে রাখার জন্য পাতাটনের জোড়াতালি ব্যবহারের ফলে যে কোন মুহূর্তে মারাত্মক দূর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। এই ব্রিজের ১০ মিটারের কাছাকাছি সড়ক ও জনপদ বিভাগ অফিস। অতি শিগগির এই সেতুর ব্যাবস্থাপনা না নিলে যেকোনো বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে জনমনে প্রতিনিয়ত আশঙ্কা নিয়ে জীবন যাপন করছেন।

দক্ষিণ অঞ্চলের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে মাতামুহুরী নদীর চিরিঙ্গা ব্রিজ। গত কয়েক মাস ধরে ঝুঁকির মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে এই ব্রিজ দিয়ে। ইতোমধ্যে ব্রিজের বিভিন্ন অংশ ও মাঝখানের একটি পিলার ফাটল দেখা দেয়ায় আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে যাতায়ত করতে হচ্ছে যানবাহন গুলোকে। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে ব্রিজের নিচে বালির বস্তা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দশটনের বেশি মালামাল পরিবহন না করতে নির্দেশ দিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। দ্রুত সময়ে সংস্কার বা মেরামত না করলে যে কোন মুহূর্তে ব্রিজটি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও যান চলাচলকারীরা।

জানা যায়, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সড়ক পথে যাতায়তের অন্যতম ব্রিজ চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর চিরিঙ্গা ব্রিজ। ১৯৫৫ সালে মাতামুহুরী নদীর উপর নির্মিত হয় এ চিরিঙ্গা ব্রিজটি। চার বছরের বেশি সময় লেগেছে তিন’শ মিটার ব্রিজটি নির্মাণ করতে। মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। সেই থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ব্রিজটির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে চরম ঝুঁকির মধ্যে।

কয়েকজন গাড়ির চালক বলেন, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এরপরও সংসারের কারণে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছি। এরমধ্যে জীবনটাকে ঝুঁকি করেছেন মাতামুহুরী নদীর ব্রিজটি। উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে গেলে কম্পন দেয় ব্রিজটি। তাছাড় বিভিন্ন অংশে ফাটল রয়েছে। এখনো মেরামত করেনি। এতো বড় ব্রিজের নিচে বালির বস্তা দিয়ে কতটুকু রক্ষা হবে?

স্থানীয় লোকজন জানান, সারাদেশ থেকে কক্সবাজারে যেতে মাতামুহুরী ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়ত করতে হয়। জেলা শহরের প্রায় ২২ লাখ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ব্রিজটি। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যানবাহন এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে। এছাড়া এই জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে লবণ, মাছ, তরিতরকারি, সবজি, শুটকী, আসবাবপত্র যানবাহনে নিয়ে যেতে এ ব্রিজ হচ্ছে একমাত্র ভরসা। নানা কারণে মাতামুহুরী ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন শতশত যানবাহন, এ ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করে। ফলে যে কোন মুহুর্তে দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসি।

চকরিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী আবু এহেসান আজিজুল মোস্তফা বলেন, মাতামুহুরী নদীর ব্রিজের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ব্রিজের কিছু গার্ডার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মাঝখানে যাতে কম্পন না হয় সেজন্য বালির বস্তা দেওয়া হয়েছে। দশটনের বেশি মালামাল পরিবহন না করতে বলা হয়েছে। বড় ধরণের সংস্কার না করার আগে এসব বালির বস্তা কিছুটা হলেও রক্ষা করবে বলে জানান।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মাতামুহুরী ব্রিজ,বেহাল,দশা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist