মাসুদ রানা, রৌমারী (কুড়িগ্রাম)

  ১১ আগস্ট, ২০২০

রৌমারীতে খেয়া পারাপার বন্ধ, দুশ্চিন্তায় মাঝিরা

আমরা তো গরীব মানুষ এই নৌকা চালাই বুড়ো বয়সে সংসার চালাতে হয়। প্রত্যেক দিন সকালে আহি রাইতের ১১ টায় বাড়ি যাই। এই হইল আমাগো জীবন। বানের পানি চইলা গেছে এখন আর ইনকাম নাই। খুব কষ্টে দিন কাটছে।

নিদারুণ বুকে চাপা কষ্টে নৌকায় বসে ধীয়ান মনে কথা গুলো বলছিলেন, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চান্দারচর গ্রামের মৃত্যু আফসার আলীর ছেলে তাঁরা মিয়া (৫৫) নামের বৃদ্ধ। তিনি রৌমারীর স্থলবন্দরে বন্যার পানিতে নৌকা চালিয়ে সংসার চালাতেন। জীবিকার তাগিদে নৌকা নিয়ে ভোর ৬টার দিকে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসেন। নৌকা দিয়ে লোকজন পারাপারে জন প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা করে নিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনো মতে ৬ সদস্যের সংসার চলতো তার। রাত ১১টা পর্যন্ত নিভু নিভু রাতের আকাশের আলোয় গ্রামের লোকজনদের পারা পার করে থাকেন। বর্তমানে নৌকার মাঝি পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদ ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন নিম্মাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করে। চারদিকে বন্যার পানি প্রবেশ করার ফলে অনেকেরই কাজ নেই, ব্যাকার হয়ে পড়েছে। জীবিকার জন্য পরিবারের অর্থ যোগান দিতে নিজ এলাকায় নৌকা চালানোর মতো পেশায় জরিয়ে পড়েন অনেকই।

অপর দিকে উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মিঠু মিয়া (৬০) বলেন, বাহে আমরা তো দিন এনে দিন খাই। বন্যার পানি চলে গেছে। নৌকা দিয়া গ্রামের মানুষরে পারা পার করি। যা পাই তা দিয়ে পরিবার চলে। ৫ জন মিলে তার সংসার। সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়।

এমন হাজার মানুষের মধ্যে অজানা অনেক অসহায় দরিদ্র পরিবারের বিশাল কষ্ট বুক চাপা দিয়ে ছোট এক বিন্দু কষ্ট মনে করে বেচে থাকে। কোন কুল না পেয়ে দারিদ্র্যতার সাথে সংগ্রাম করে নৌকা চালানোর মতো পেশায় জরিয়ে পড়ে অসহায় এই পরিবারগুলো। এদিকে করোনা ও দফায় দফায় বন্যার কারণে দুর্ভোগে দুশ্চিন্তায় দিন কাটে অসহায় দরিদ্র এই নৌকা চালকদের।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রৌমারী,খেয়া পারাপার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close