রাজশাহী ব্যুরো

  ১২ জুলাই, ২০২০

চলতি মৌসুমে চাষ বেড়েছে সাড়ে ৯শ’ হেক্টর

রাজশাহীতে পাটের বাম্পার ফলন হলেও দুশ্চিন্তায় কৃষক

রাজশাহীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। আর গত বছরের তুলনায় রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। আবার অন্য বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে ফলনও বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। কিন্তু সম্প্রতি পাটকলগুলো বন্ধের ঘোষণায় চাষিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। নায্যমূল্য পাওয়া তো দুরের কথা পাট বিক্রি করে বিনিয়োগের টাকা পকেটে তুলতে পারবে কী না তা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর পানির অভাবে কাঙ্খিত স্থানে পাট পচাঁনোতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তারপরেও বিগত কয়েক বছর পাটের ফলন ও দাম ভালো পেয়েছে কৃষকরা। তাই লাভের মুখ দেখতে এ বছর রাজশাহীতে আবাদের পরিমাণও বেড়েছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে আশানুরূপ বৃষ্টি হওয়ায় পাট কাটা, জাগ দেওয়াতে এখন পর্যন্ত সমস্যার সম্মুখিন হওয়ার কোনও খবর মেলেনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাজারে পাট বিক্রি শুরু হবে। তবে এবার নায্য দাম পাওয়া নিয়ে কৃষকরা রয়েছেন সংশয়ে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা হাটের পাইকারি ক্রেতা মঈন উদ্দিন জানান, পাট এখনো বাজারে উঠতে শুরু করেনি। দাম কেমন হবে পাট উঠলেই বোঝা যাবে। সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ থাকায় এবার পাটের দাম ভাল আশা করা যায় না। যদি বেসরকারি পাটকলগুলো সিন্ডিকেট করে পাটের দাম কমায় তাহলে বেকায়দায় পড়তে হবে।

পুঠিয়া উপজেলার তারপুর গ্রামের কৃষক আরিফুল বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে হাল চাষ, সার, বীজ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। কমপক্ষে ৩ বার জমিতে নিড়ানির মজুরি দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। পাট কাটা থেকে শুরু করে বিক্রির জন্য তৈরিতে আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা লাগছে। তার পরে এবার সরকারের পাটকলগুলো বন্ধ। পাট কিনবে কারা ?

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানায়, দাম ভালো পাওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকছে কৃষক। ফলে পাটের চাষ প্রতিবছরই বাড়ছে। যার ফলশ্রুতিতে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে।

তিনি জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু তা বেড়ে চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। আর গত বছর চাষাবাদ হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকারি পাটকল বন্ধ। তবুও পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। কারণ বে-সরকারি পাট কলগুলো রয়েছে। এছাড়া বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদা। ফলে কৃষকদের হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজশাহী,পাট,বাম্পার ফলন,কৃষক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close