মৃণাল সরকার মিলু, তাড়াশ

  ০৯ জুলাই, ২০২০

তাড়াশ-ভূঁইয়াগাঁতী রাস্তা সংস্কারে ধীরগতি, দুর্ভোগ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছি বাজার হয়ে ভূঁইয়াগাঁতি পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ, মজবুতকরণ ও মেরামত কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের পাশাপাশি কাজের ধীরগতির কারণে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় তাড়াশ অংশের হাঁস-মুরগি খামার থেকে চন্ডীভোগ পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং না করে ফেলে রাখায় পানি কাদায় একাকার হয়ে যান চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। ঘটছে দুর্ঘটনা।

অবশ্য ঠিদাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আব্দুল লতিফ জানান, লকডাউনের কারণে ভারত থেকে পাথর আমদানি না হওয়ায় তারা রাস্তার কাজ সমাপ্ত করতে পারছেন না। তবে এলাকাবাসী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির দাবি নাকচ করে দিয়ে অভিযোগ করে বলেন, অন্যান্য রাস্তার কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করলেও তারা গাফিলাতি করে এ রাস্তার কাজ ফেলে রেখে জনদুর্ভোগ বাড়াচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে তাড়াশ-ভূঁইয়াগাঁতি রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে মেসার্স বাঁশি কনস্ট্রাকশন ২৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার কার্যাদেশ পায়।

২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের এমপি অধ্যাপক আবদুল আজিজ আনুষ্ঠানিকভাবে রাস্তাটির সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন।

কিন্তু নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। গণমাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ প্রসঙ্গে রাস্তাটির সাব ঠিকাদার দুলাল হোসেন বলেন, সড়কে প্রথম দিকে সামান্য কিছু খারাপ বালু ভুলক্রমে ফেলা হয়েছিল। পরে তা উঠিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু করোনাভাইসের কারণে লকডাউন থাকায় ভারত থেকে পাথর আমদানি না হওয়ায় অবশিষ্ট রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জ সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ জানান, ওই সড়কে পলিমাটি মিশ্রিত নিম্নমানের বালু ব্যবহারের বিষয়টি তাদের নজরে আসে। এ কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফা লিখিতভাবে সতর্ক চিঠিও দেওয়া হয় এবং মেরামত কাজে ব্যবহার করা বালু সংগ্রহ করে তার গুণগত মান যাচাই করতে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েটে) পাঠানো হয়।

এসব চিঠি চালাচালির মাঝেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ১৭ কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে ১২ কিলোমিটার পাকা করণ সম্পন্ন করে। অবশিষ্ট সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং না করে ফেলে রাখায় বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী। অথচ রাস্তাটি তাড়াশ উপজেলার অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ। এ রাস্তা দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা সদর থেকে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম।

সিরাজগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। করোনা সংকটের কারণে সংস্কার কাজে বিঘ্ন ঘটছে। পাথর সংকটের পাশাপাশি বর্ষা মৌষুম হওয়ায় বৃষ্টির কারণে কার্পের্টিংয়ের কাজে সময় লাগছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাস্তা সংস্কার,দুর্ভোগ,তাড়াশ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close