পাবনার দাশুড়িয়া-দরগা হাট পাঁকা সড়কটির বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৮ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি জেলার ঈশ্বরদী এবং আটঘরিয়া উপজেলার মানুষের মধ্যে চলাচলের প্রধান সড়ক। বর্তমানে সড়কটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে ভরা সড়কে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।

সরেজমিন দেখা গেছে, ব্যস্ততম পাঁকা সড়কটির প্রায় অনেক জায়গার কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে। ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া ছাড়াও এ সড়কে চাটমোহর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি মেরামতের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে এলাকাবাসী।

দরগা হাট এলাকার বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বাচ্চু জানান, সড়কটি দীর্ঘ কয়েক বছরেও সংস্কার হয়নি। ফলে সড়কটিতে প্রতিদিন চলাচলকারী অসংখ্য ট্রাক, ট্র্যাক্টর, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোবাইক, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। সেই সাথে মানুষের সময়ের অপচয় হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এলাকায় ঘটছে নানা প্রতিকূলতা। জরাজীর্ণ এ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। যেন কারোরই নজরই পড়ছে না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবর রহমান বলেন, সড়কটি দিয়ে দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মুনশিদপুর, আথাইল শিমুল, মাড়মী, সুলতানপুর, খয়েরবাড়িয়া, বাড়াহুশিয়া, বয়ড়া এবং খালিশপুর গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে সড়কটি। আড়াই বছর পূর্বে ৯৯ লাখ টাকার বাজেটে দাশুড়িয়া মুনশিদপুর থেকে মাড়মী বটতলা পর্যন্ত ২৬০০ মিটার রাস্তা একফুট করে দু’পাশে বাড়ানো হয়ে ছিল। ক্ষতিগ্রস্থ সড়কটির মেরামত বা উন্নয়নের জন্য বার বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও তারা কোন ভূমিকা নেয়নি।

দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বকুল সরদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা উন্নয়ন কমিটির মিটিংয়ে সড়কটির সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়েছি। বর্তমানে সড়কটি ১০ ফুট আছে, ১৮ ফুট করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে বলে এলজিইডি থেকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে এ রাস্তা সংস্কারের নামে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, সড়কটি সম্পর্কে জেনেছি। সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কটি বেশী লোডের যানবাহন চলাচলের জন্য ভেঙে গেছে। সড়কটি আমাদের সংস্কারের তালিকায় অগ্রাধিকারে রয়েছে। চলতি বছরের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়কটি ১০ ফুট থেকে ১৮ ফুট প্রশস্তকরার বিবেচনাধীন রয়েছে। প্রয়োজনীয় বাজেট পেলেই সড়কটির কাজ শুরু করবো।

পিডিএসও/এসএম শামীম