দোহার প্রতিনিধি

  ০৫ জুলাই, ২০২০

দোহারে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেফতার ১

ঢাকার দোহার উপজেলার বিলাসপুরে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ধর্ষণের সহযোগীতা করার অপরাধে সুমা (৩০) নামের এক নারীকে গ্রেফতার করেছে দোহার থানা পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিকশাচালক সুমন তার স্ত্রী ও ১৩ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে। গত তিন মাস পূর্বে একই এলাকার সেলিম চোকদারের (৪৫) মেয়ের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে ওই কিশোরীর। সেলিমের স্ত্রী প্রবাসে থাকায় মাঝে মধ্যেই রাতে সেলিম চোকদারের মেয়ের সাথে বাড়িতে থাকতেন রিকশাচালক সুমনের কিশোরী মেয়ে।

ধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরী বলেন, এক রাতে সেলিম চোকদারের মেয়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিলাম আমি। ঘুমন্ত অবস্থায় মধ্যরাতে হঠাৎ করেই সেলিম চোকদার এসে আমার মুখ চেপে ধরে বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আমাকে।

ধর্ষণের এ ঘটনা কাউকে না জানাতে কিশোরীটিকে নানারকম ভয়ভীতি দেখান অভিযুক্ত সেলিম চোকদার। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি। প্রতিবেশী বন্ধু কিয়ামউদ্দিন হওলাদার (৪৯) ও ইদ্রিস মোল্লাকে (৪৮) নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধর্ষণ করেন সেলিম চোকদার। আর এ কাজে টাকার বিনিময়ে সহযোগীতা করেন ধর্ষিত কিশোরীর বাড়িওয়ালার মেয়ে সুমা এবং আরেক প্রতিবেশী মুদি দোকানদার তারা মিয়া (৪৭)।

ওই কিশোরী আরও জানান, ধর্ষণের সময় ধর্ষকরা এ ঘটনা কাউকে না জানাতে দা, বটি দেখিয়ে তাকে হত্যার ভয় দেখাতো। শুধু তাই নয় ধর্ষকদের সহযোগী মুদি দোকানী তারা মিয়া কিশোরীর বাবা সুমনের কাছে টাকা পাবে এ কথা বলে কিশোরীকে সুযোগ বুঝে দোকানে নিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতেন।

সম্প্রতি এ ঘটনা নাটকীয়ভাবে জানাজানি হয় একটি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে। শুক্রবার বিলাসপুর ইউনিয়নের আলম বাজার এলাকায় রাধানগর গ্রামসহ আশ পাশের অন্ত্যান্ত তিনটি গ্রামের ৫শতাধিক লোকের সমাবেশ ঘটিয়ে কিশোরীটির উপস্থিতিতে এঘটনার বিচারের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তরা শালীসে উপস্থিত না হওয়ায় এবং ঘটনাটি আনুমানিক আড়াই মাস আগে হওয়ায় মেয়েটি অন্তঃসত্তা হতে পারে বলে তা সমোঝতার বাধার কারণ হয়। এ সময় বিচারে থাকা সমাজপতিরা দোহার থানা পুলিশকে এ বিষয়টি অবগত করেন।

এ ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে শালিস বসার একদিন পর অদৃশ্য কারণে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী চুপ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় সাংবাদিক ও নারী সমাজকর্মীদের হস্থক্ষেপে বিষয়টি আমলে নেন দোহার থানা পুলিশ।

ধর্ষণের স্বীকার কিশোরীটির পিতা রিকশা চালক সুমন জানান, অভিযুক্তরা তাকে প্রথমে টাকা দিয়ে ঘটনাটি মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। তিনি এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে দোহার থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে কিশোরীর বাবা সুমন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে পৃথক তিনটি মামলা করেছে। এঘটনায় ধর্ষণের কাজে সহযোগী সুমা নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের ধরতে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
দোহার,কিশোরী,ধর্ষণ,মামলা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close