আল-আমিন মিয়া,পলাশ (নরসিংদী)

  ০৫ জুলাই, ২০২০

করোনাভাইরাসের হানা

পলাশে ভালো নেই কিন্ডারগার্টেনের ৪ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা

মহামারি করোনাভাইরাসের হানায় অস্তিত্ব সংকটে পড়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনের সাথে জড়িত প্রায় ৪শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। এছাড়া অর্থ সংকটে পড়ে উপজেলার অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেনগুলোই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষারত শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবন নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা।

পলাশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, পলাশ উপজেলায় প্রায় ৬০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। ওই সকল কিন্ডারগার্টেনগুলোর স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়ে থাকে। যেকারণে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারিভাবে তেমন কোনও তদারকি করা হয় না। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন ঘুরে দেখা যায়, করোনা সংকটের কারণে সবগুলো কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে রয়েছে। যেকারণে নানান রঙে সাজানো-গুছানো কিন্ডারগার্টেনগুলোও অব্যবস্থাপনায় পাল্টে গেছে স্কুলের চিত্র। তাছাড়া এসব কিন্ডারগার্টেনগুলোর সাথে জড়িত শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

পলাশ কিন্ডারগার্টেন এন্ড কোচিং একাডেমির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া মাসিক চাঁদার টাকায় চলে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর সমস্ত খরচ। দেশে করোনাভাইরাস আসার পর সরকারি সিদ্ধান্তে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে উপজেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। যেকারণে অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোই ঘর-ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খরচ বহন করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে।

পলাশ উপজেলা কিন্ডারগার্টেন ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোর সাথে জড়িত অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকাই নিম্নবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। এসকল শিক্ষক-শিক্ষিকা তাদের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর পাশাপাশি এসব কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করে পরিবারের সংসার চালাতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া অধিকাংশ শিক্ষকই কোচিং সেন্টার চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কিন্তু দেশে করোনা সংকটের কারণে বর্তমানে তারা বাড়ি ভাড়া ও সংসার খরচ দিতে গিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেই সাথে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও তাদের শিক্ষা জীবন নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তার ভিতরে পড়েছে। তাছাড়া এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো যদি টিকিয়ে না রাখা যায়। তবে ভবিষ্যতে এসব শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করতে গিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোকেও অনেকটা চাপ নিতে হবে। যেকারণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য অতি দ্রুত সরকারি প্রণোদনার দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজা খান ইউসুফজী প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সরকারিভাবে কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোর জন্য কোনো প্রণোদনার সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারিভাবে যদি এমন কোনো নির্দেশনা আসে তবে কিন্ডারগার্টেন গুলোর তালিকা তৈরি করা হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পলাশ,কিন্ডারগার্টেন,শিক্ষক-শিক্ষিকা,করোনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close