মোঃ নাজমুল সাঈদ সোহেল, চকরিয়া
চকরিয়ায় স্থানীয় এমপির প্রচেষ্টায় জেলার ৩য় পিসিআর ল্যাব স্থাপন
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে করোনার স্যাম্পল টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ও কক্সবাজারের সমন্বয়কারী হেলালুদ্দীন আহমদকে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমের অনুরোধক্রমে তিনি কক্সবাজারের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডুলাহাজারার মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে করোনার স্যাম্পল টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনে আর্থিক সহায়তায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য (কক্সবাজার -১)আলহাজ্ব জাফর আলম প্রতিদিনের সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইনচার্জ(টিআই)মোহাম্মদ শাহবাজ বলেন, চকরিয়ায় এই পর্যন্ত ১৮৯জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে বাড়িতে ও হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১১৯জন এবং মারা গেছেন ২ জন।
তিনি আরো বলেন, গত ২৩ মে হতে অদ্যবধি আমরা ৩৬৬টা নতুন সম্ভাব্য করোনা রোগীর স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছি যার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে আমাদের হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ চকরিয়া উপজেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নমুনাও রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে জানা যায় যে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে অত্র জেলার ৮ উপজেলার নমুনাসহ বান্দরবান ও চট্টগ্রাম এর বেশ কয়েকটি উপজেলা ও এফডিএমএন (রোহিঙ্গা) এর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ কারণে ল্যাবে অনেক নমুনা পরীক্ষার অপেক্ষায় জমে আছে। নমুনা সংগ্রাহক কর্তৃপক্ষ হিসেবে আমরা আমাদের সাধ্যের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। পরীক্ষা সঠিক সময়ে সম্পন্ন না হওয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে নাই, যদিও এ বিষয়ে আমরা প্রতিনিয়ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। এত জটিলতার মাঝেও চিকিৎসক হিসেবে আনন্দের বিষয় হল অদ্যবধি চকরিয়া উপজেলার ৩৮ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন, ৭৪ জন রোগী বাসায় চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন এবং অন্যান্য উপজেলার (পেকুয়া-কুতুবদিয়া) ৩১ জন রোগী আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন। মাননীয় এমপি মহোদয়ের কাছ থেকে শুনেছি মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে করোনার স্যাম্পল টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপন হবে।এটি বাস্তবায়ন হলে সবার জন্য মঙ্গলজনক এবং দ্রুত করোনা চিকিৎসার পরিধি সহায়ক হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য (কক্সবাজার-১)আলহাজ্ব জাফর আলম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, দিনদিন বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত রোগী কিন্তু স্যাম্পল সংগ্রহ হলেও রিপোর্ট মিলছেনা সহজেই, জেলায় একটি মাত্র পিসিআর ল্যাবের কারণে ।এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করলে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করার পর মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে করোনার স্যাম্পল টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ দেন। ইতোমধ্যে চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালটি চিকিৎসাধীন করোনা রোগীতে সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ হওয়ায় বর্ধিত (এক্সটেনশন) অংশ হিসাবে বেসরকারি মালিকানাধীন প্রাইভেট হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মহেশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার করোনা আক্রান্ত রোগী নিয়ে চকরিয়া ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে।চতুরপাশের চাপটা কিন্তু চকরিয়ায়। তাছাড়া চকরিয়া উপজেলা করোনা রোগী আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে জেলায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তাই জনস্বার্থ বিবেচনা করে মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালকে করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্টের একটি পিসিআর (পলিমারি চেইন রি-এ্যাকশন) ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনে এক কোটি ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। কক্সবাজার জেলার তৃতীয় এই পিসিআর মেশিন স্থাপনে সরকারের পক্ষ থেকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পেলেও অবশিষ্ট অর্থ স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আমার এলাকার জনস্বার্থে আমি ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সংস্থান করব বলে তিনি জানান।