ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা বাক্তা বাজারে অবরুদ্ধ শিক্ষক পরিবার। শিক্ষক ইউছুফ আলীর স্ত্রীর পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতে থাকার ঘর করতে গিয়ে গৃহবন্দি এই পরিবার। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) থেকে তিনি ঘরে বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ নিয়ে থানায় ও স্থানীয়ভাবে একাধিক সালিশ দরবার করেও কোনো সুরাহা হয়নি।

থানায় মামলা হলে আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও ভাংচুর চালায়। গৃহবন্দি পরিবার যেন বাড়ি থেকে চলে যায় এজন্য হুমকি ধামকিও দিয়ে আসছে। বাড়ি থেকে বের হলেই দখল নিতে পারে জবরদখলকারীরা। বাসা থেকে বের হওয়ার রাস্তাটিও বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

শিক্ষকের স্ত্রী সেলিনা আক্তার জানান, দুই দিন যাবত আমাকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না আমার চাচাত ভাইবোনেরা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, বাসায় পানি নেই, প্রস্রাব-পায়খানা করার কোনো ব্যবস্থা নেই, ঘরেই জরুরত কাজগুলো করতে হচ্ছে। আমার কাছে কাউকে আসতে দিচ্ছে না। আমাকে বের হয়ে দেখা করতে বলে, কিন্তু এখান থেকে বের হলেই তারা বাসা দখলে নিয়ে যাবে। আমি আমার বাপের পৈত্রিক সম্পত্তিতে থাকতে চাই। আমার ২টি সন্তান, তারা আমার জন্য কান্নাকাটি করছে। সোনারুবাড়ীর লোকজনের জন্য থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোনারুবাড়ির মৃত সাহেব আলী মাস্টারের ৫ কন্যা সন্তানের একজন সেলিনা আক্তার। বাবা মারা যাওয়ারপরই পাঁচ বোন বন্টন অনুযায়ী তাদের পাওনা বুঝে নেয়। তাদেরই একজন সেলিনা। তিনি তার বাপের পৈত্রিক সম্পত্তিতে ফাউন্ডেশন দিয়ে ঘর উত্তোলন করে প্রায় প্রথম তলার কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেলে তার জেঠা ও চাচা এবং তাদের সন্তানেরা কাজে বাধা দেয়। স্থানীয়ভাবে মিমাংসা না হওয়ায় সেটি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। মামলায় একজন আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে ওই আসামিসহ বাকিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায়।

বাধা প্রদানকারীরা জানিয়েছেন, চাচার সম্পত্তির ভাগ কন্যারা পেলে আমরা (চাচাতো ভাইবোন) কেন পাবো না?

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুঞ্জুরুল হক মুঞ্জু বলেন, বিষয়টি আমি অবগত। স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।

ফুলবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) শেখ জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, অবরুদ্ধের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিডিএসও/হেলাল