কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ৩০ এপ্রিল, ২০২০

করোনায় খাদ্য সহায়তা

সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের নিরলস প্রচেষ্টা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় চলছে লকডাউন। সরকারের ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গত ২৪ মার্চ থেকে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের চারটি উপজেলাকে করোনামুক্ত রাখতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ডে ১০ পদাতিক ডিভিশনের সেনাসদস্যরা নিরলস কাজ করে চলেছেন।

অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও কক্সবাজারের ৬টি এবং চট্টগ্রামের ৪টি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় চরম বিপাকে পড়া কর্মহীন, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দিতে বাড়ি বাড়ি ছুটেছেন অকুতোভয় সেনা সদস্যরা। তারা কোনো রকম জনসমাগম না করেই নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে চাল, ডাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, তেল, লবণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী অসহায়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন এলাকায় উপস্থিত হয়ে যাদের হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে থাকার কথা তাদের বিষয়ে খোঁজ রাখছেন। পাশাপাশি সাধারণ জনগোষ্ঠীকে মাইকিং করে নিয়মিত হাতধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিবিধ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানাচ্ছেন সেনাসদস্যরা। কক্সবাজারের অনেক জায়গায় সেনাবাহিনীর মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেনা চিকিৎসক, নার্সসহ সেনাসদস্যরা করোনা মোকাবিলায় নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে সড়কে জনসাধারণের চলাচল অনেকটা সীমিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেও বিভিন্ন প্রয়োজনে যারাই বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের প্রায় সবাইকে সেনাবাহিনীসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পাড়া-মহল্লায় প্রয়োজনীয় দোকানের বাইরে যেসব দোকান-পাট খোলা হয়েছে, সেসব দোকান সেনাসদস্যরা বন্ধ করে দিচ্ছেন। রমজানে গরম আর রোদ-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সেনাসদস্যরা নিরলসভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছেন। ইফতারির সময়ে তারা রাস্তার কোনো এক ফাঁকা স্থানে চটজলদি নিজেদের ইফতার ও নামাজ সেরে নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়ছেন তাদের লক্ষ্যে। এছাড়া তারাবি নামাজ উপলক্ষে যেন বিশৃঙ্খলা এবং অতিরিক্ত জনসমাগম না হয়, সেলক্ষ্যে সেনাসদস্যরা তাদের কর্মপরিধি আরও বৃদ্ধি করেছেন।

রামু সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, লকডাউনে যেসব মানুষ রয়েছে তাদের একটা বড় অংশ খেটে খাওয়া অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তাই তাদের জন্য খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও তাদের বরাদ্দকৃত রেশন বাঁচিয়ে একটি অংশ এসব হতদরিদ্র মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, কক্সবাজার জেলার কিছু দূর্গম পাহাড়ি এলাকাতেও তারা পায়ে হেঁটে কাঁধে করে রেশন বয়ে নিয়ে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করছেন। যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সেনাবাহিনী সার্বক্ষণিক জনগণের পাশে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সেনাবাহিনী,করোনাভাইরাস,কক্সবাজার,খাদ্য সহায়তা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close