রাজশাহী ব্যুরো

  ১৮ এপ্রিল, ২০২০

সংক্রমণের ঝুঁকিতে উত্তরাঞ্চলের লক্ষাধিক শ্রমিক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বাংলাদেশ। এই ভয়াবহতার মধ্যে উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু বিড়ি ফেক্টরিসহ অসংখ্য তামাক কারখানা এখনো চালু রয়েছে। আর বর্তমান সময়ে করোনার ছোবলে আটকে যাওয়া আয়ের অধিকাংশ উৎসের দুর্বলতাকে পুঁজি করছে এসব তামাকজাত প্রতিষ্ঠান। যার ফলশ্রুতিতে তামাক কারখানায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন আরও শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। লক্ষাধিক শ্রমিক নিরুপায় হয়ে করোনা সংক্রণের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে।

তাই উত্তরাঞ্চলের তামাক কারখানাসহ দেশের সকল তামাক কারখানা ও কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছে উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’।

সংস্থাটির তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ভাইরাসের ভয়াবহতা বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। অথচ উত্তরাঞ্চলের রংপুরের হারাগাছে ছোট-বড় প্রায় ৩০টি বিড়ি কারখানা চালু রয়েছে। এসব ফ্যাক্টরিতে অন্যান্য সময় প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক কাজ করলেও সুজোগ সন্ধানি তামাক কোম্পানির মালিকরা বর্তমানে সে সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় লক্ষাধিকের কোটায় নিয়ে গেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এসব অসহায় শ্রমিক সামাজিক দূরত্ব না মেনে কাজ করায় মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে আকিজ বিড়ি কারখানার প্রায় ১ হাজার শ্রমিককে মাইকিং করে জোরপূর্বক কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই কোনো ধরনের দূরত্ব বজায় না রেখেই ঈশ্বরদী শহরের গোকুল নগরে অবস্থিত আকিজ বিড়ির কারখানার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। একইভাবে লালমনিরহাটেও আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরিসহ কয়েকটি তামাক কারখানা এখনো চালু রয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানেও হাজার হাজার শ্রমিক করোনা ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে এসিডি জানায়, অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি। এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপায়ীদের ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তামাকের উৎপাদন, বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা চালু রাখায় এসিডি চরমভাবে উদ্বিগ্ন। তাই অনতিবিলম্বে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের সকল তামাক কারখানা ও তামাকের বহুজাতিক কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শ্রমিক,সংক্রমণ,উত্তরাঞ্চল,করোনাভাইরাস,এসিডি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close