শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার

  ৩০ মার্চ, ২০২০

করোনার প্রভাবে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায় ধস

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রভাবে কক্সবাজারে পর্যটনসংশ্লিষ্ট সব ধরনের ব্যবসায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। জেলার সমগ্র অর্থনীতি যেমন বাধাগ্রস্ত তেমনি পর্যটন শিল্প প্রায় স্থবির। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল, রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। যানবাহন ও বিমান পরিবহন বন্ধ। খোলা রয়েছে, মুদি, তরকারী আর ওষুধের দোকান।

এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দা শুরু হয়ে গেছে। করোনা রোধে সব ধরনের সভা সমাবেশ কিংবা অনুষ্ঠান আয়োজন নিষিদ্ধ' করেছে প্রশাসন। ২৬ মার্চ থেকে চলছে লকডাউন। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। লকডাউন সফল করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজদারী বাড়িয়েছে, বসিয়েছে স্থানে স্থানে চেকপোস্টও।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট। বছরের এই সময়ে পর্যটকে ভরপুর থাকে। এখন পর্যটকশূন্য। খালি পড়ে রয়েছে সৈকতের কিটকট ছাতাগুলো। বেকার সময় পার করছেন সৈকতের ফটোগ্রাফার, হকার ও স্পীডবোট চালকরা। একই অবস্থা সৈকতের বাকি পয়েন্টগুলোতেও। সৈকত পাড়ে রয়েছে এক হাজারের বেশি বার্মিজ দোকান। সৈকত পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ায় দুশ্চিন্তা ভর করেছে দোকানীদের উপর।

কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্টের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন সহ ব্যবসায়ীরা জানান, এখন খুব অভাব অনটনের মধ্যে চলছে তাদের জীবন। তারা জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করে পর্যটনের উপর। কিন্তু করোনার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে তাদের ব্যবস্থা বাণিজ্যের উপর।

কক্সবাজারের বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্টান, হাসপাতালগুলোতে প্রবেশের সময় প্রত্যেক মানুষকে হাত পরিষ্কার সহ নেয়া হয়েছে নানা সতর্কতা। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এখন সৈকত নয় শুধু, পুরো শহরই জনমানবশুন্য। শহরের প্রবেশদ্বার লিংক রোড, কলাতলি মোড়, বিমান বন্দর রোড়ের মোড়, খুরুশকুল ব্রীজের পাশে এবং কক্সবাজার জেলায় প্রবেশমুখ চকরিয়াও সহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পুলিশের চেক পোস্ট।

পর্যটনকে ঘিরে গড়ে উঠা কক্সবাজার আবাসিক হোটেলের সংখ্যা সাড়ে চার শতাধিক। যেখানে প্রতিদিন গড়ে অবস্থান করতে পারেন এক লাখের বেশি পর্যটক। কিন্তু নেউ কোন পর্যটক। চলছে লকডাউট।

সেই সাথে পর্যটক সমাগম এলাকা সৈকতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় মাটিতে নেমে এসেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাত। করোনাভাইরাসের কারণে অসংখ্য মানুষ কক্সবাজার ভ্রমণ স্থগিত রেখেছে। পর্যটন খাত বড় ধরনের বিপদে আছে। মানুষ সফর কম করছে বলে অনেক এয়ারলাইনস এখন আর আকাশে উড়ছে না। ব্যবসা বাণিজ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে।

কক্সবাজার হোটেল, মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ২০ হাজার মানুষ হোটেল বুকিং বাতিল করেছে । এতে করে শত কোটি লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২০ সাল কক্সবাজারের পর্যটনের জন্য খুব কঠিন একটি বছর হতে চলেছে বলেও জানান পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কক্সবাজার,করোনা,পর্যটন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close