বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

বেনাপোলে ‘করোনাভাইরাস’ রোগী শনাক্ত গুজব

ভারত থেকে আসা কলকাতা-খুলনাগামী বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনে জহিরুল ইসলাম নামে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী ‘করোনাভাইরাসে’ আক্রান্ত হয়েছেন—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার লোকজন।

‘করোনাভাইরাসে’ আক্রান্ত শুনে এলাকার কোনো সংবাদকর্মীও ভয়ে ঘটনাস্থলে যেতে সাহস পাননি। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে জানা যায়, বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। তবে এই যাত্রী গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি চীন থেকে দেশে আসেন।

এর আগে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাংলাদেশি এক পাসপোর্টযাত্রী ‘করোনাভাইরাসে’ আক্রান্ত রোগী বেনাপোল রেলস্টেশনে শনাক্ত হয়েছে এমন খবরে সাধারণ লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক এমন খবরে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা ও আকরাম হোসেন বিষয়টি যশোর সিভিল সার্জন অফিস ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে অবহিত করেন।

‘করোনাভাইরাসের’ গুজব উঠা পাসপোর্টযাত্রী হলো কুমিল্লা জেলার জয়নাল আবেদিনের ছেলে জহিরুল ইসলাম ও রাজবাড়ী জেলার সুমিত ভৌমিক। পরে তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় বেনাপোল ও শার্শার মেডিকেল টিম সেখানে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের শরীরে ‘করোনাভাইরাসে’র লক্ষণ পাওয়া যায়নি। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তার আগে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে দেশের সর্বত্র।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার আজিম উদ্দিন বলেন, এ ধরনের সংবাদে আমরা জহিরুল ইসলাম ও সুমিত ভৌমিক নামে ২জনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। তাদের শরীরে এ ধরনের কোনো ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এরপর আমরা ঢাকায় উচ্চপর্যায় কথা বলে তাদের ছেড়ে দেই। তবে ওই দুইজন পাসপোর্টযাত্রী ব্যবসায়ী। তারা চীনের সাথে ব্যবসা করে। প্রায় ২৫ দিন আগে তারা চীন থেকে বাংলাদেশে আসে।

এদিকে পরে কাস্টমস কমিশনার দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, চিকিৎসকের পরীক্ষায় জহিরুল ইসলামকে ‘করোনাভাইরাস’মুক্ত বলা হয়েছে। আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করি।

তিনি বলেন, সবাই সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আমরা সচেতনতার জন্য পোস্ট দেই। সংশয়ের জন্য নয়। দয়া করে কেউ আতঙ্ক ছড়াবেন না। কাস্টমস চেকপোস্টে সচেতনতার জন্য আমরা গত ২৯ জানুয়ারি তারিখে করোনা সচেতনতায় সেমিনার করি। স্বাস্থ্যকর্মকর্তাদের প্রদর্শিত নির্দেশনায় কাস্টমস টীম দায়িত্বের অংশ হিসেবে রোগী আলাদা করে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে হস্তান্তর করেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, স্টেশনে এ ধরনের একজন রোগীর ব্যাপারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ‘করোনাভাইরাস’ আক্রান্ত রোগী বলে সন্দেহ করেছিল। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটা একটি নিছক গুজব ছড়িয়েছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বেনাপোল,করোনাভাইরাস,রোগী শনাক্ত,গুজব
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close