গাজীপুর প্রতিনিধি

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু : তদন্ত কমিটি গঠন

গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ইয়াসমিন বেগমের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলেছে, ওই নারী মাদক কারবারি। ১০০ পিস ইয়াবাসহ তাকে আটক করার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন।

এ মৃত্যুর ঘটনায় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আজাদ মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নিহত ইয়াসমিন বেগম (৪০) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাজীপুরা এলাকার আবদুল হাইয়ের স্ত্রী। নিহতের ছেলে জিসান ও বোন ফারজানা বেগম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগর ডিবি পুলিশের একটি দল তাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় আবদুল হাইকে খোঁজাখুঁজি করে। এক পর্যায়ে ইয়াসমিন বেগমকে আটক করে নিয়ে যায়।

জিসান আরো অভিযোগ করেন, রাত ১১টার দিকে তিনি তার মায়ের (ইয়াসমিনের) মোবাইলে ফোন দেন। অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে প্রথমে ডিবি অফিসে যেতে বলে। কিছুক্ষণ পর তারা আমাকে ডিবি অফিসে না গিয়ে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলেন।পরে হাসপাতালে গিয়ে তিনি তার মার মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। তিনিসহ স্বজনরদের অভিযোগ পুলিশের নির্যাতনে ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়েছে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টা ১০ মিনিটের দিকে ডিবি পুলিশ ইয়াসমিনকে এ হাসপাতালে আনে। এ সময় তার বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এক পর্যায়ে রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে এ হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়। নিহতের শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মনজুর রহমান জানান, ইয়াসমিন মাদক কারবারি। মাদক কেনাবেচার খবরে পেয়ে অভিযান চালিয়ে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তাকে আটক করা হয়। এ ছাড়াও তার নামে দুটি এবং তার স্বামীর নামে একাধিক মামলা রয়েছে। আটকের পর ইয়াসমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নেওয়ার প্রস্তুতির সময় তিনি মারা যান। তাকে নির্যাতন করা হয়নি।

তিনি বলেন, নিহতের ছেলে তাকে জানিয়েছে আগেও ইয়াসমিন স্ট্রোক করেছিল। নিহতের হার্টে দুটি ব্লক ছিল। এদিকে এ ঘটনা তদন্তে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আজাদ মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে মহানগর পুলিশ।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গাজীপুর,নারী,পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু,ডিবি পুলিশ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close