চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে চলছে দেশ : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে। এ উন্নয়ন অগ্রগতি কখনো সম্ভব হতো না প্রকৌশলীদের অবদান ও ভূমিকা ব্যতিরেকে। শুক্রবার রাউজানে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সুবর্ণ জয়ন্তীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে। বাংলাদেশে কবিতায় কুঁড়েঘর আছে, বাস্তবে কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ নয়, মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। ’৫০-এর দশকের মাঝামাঝি যখন লোকসংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৭০ লাখ তখন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আজ লোকসংখ্যা ১৬ কোটি ৭০ লাখ কিংবা তারও বেশি, সাড়ে তিন গুণের বেশি বেড়েছে।

’৫০-এর দশকের তুলনায় মাথাপিছু জমি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে। এরপরও পৃথিবীর সর্বনিম্ন মাথাপিছু জমি নিয়ে পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। জিডিপি গ্রোথ রেট পৃথিবীতে সব দেশের তুলনায় বেশি গত সাড়ে ১০ বছরে। এ উন্নয়ন অগ্রগতি কখনো সম্ভব হতো না প্রকৌশলীদের অবদান ও ভূমিকা ব্যতিরেকে। আমরা বাঙালিরা বৈশ্বিকভাবে হয়তো ধনী নই। কিন্তু মেধার দিক দিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ ও জাতি থেকে অনেক ধনী। অনেক জাতিগোষ্ঠীর তুলনায় আমরা অনেক মেধাবী।

ইউরোপের বাইরে প্রথম যিনি সাহিত্য নোবেল পুরস্কার পান তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। গাছের যে প্রাণ আছে তা যিনি প্রথম আবিষ্কার করেন তিনি বাঙালি, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু। ২০ বছর আগে পৃথিবীর সর্বোচ্চ যে টাওয়ার ছিল সেই সিকাগোর টাওয়ারের স্থপতি ড. এফ আর খান। অনেক সুরম্য অট্টালিকা তৈরিতে জড়িত বাংলাদেশ থেকে পাস করা প্রকৌশলীরা। তারা সিলিকন ভ্যালিতে কাজ করে। পৃথিবীর অনেক আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। মেধার স্বাক্ষর যে এখানে রাখছেন তা নয়। পৃথিবীব্যাপী অবদান রাখছে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

মন্ত্রী বলেন, বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত দেশ গঠন সম্ভব। বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে সুরম্য অট্টালিকা হয়, দীর্ঘ সেতু হয়, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল হয়, ফ্লাইওভার হয়, পাহাড়ের মাঝখানে ফুটো করে সুড়ঙ্গ দিয়ে ট্রেন বা গাড়ি চলে। শুধু বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নত জাতি গঠন করা সম্ভবপর নয়। এটি ভিন্ন কাজ। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত দেশ গঠন করা নয়, পাশাপাশি একটি উন্নত জাতিও গঠন করা। এর জন্য প্রতিটি মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, আমরা উন্নয়ন চাই, রাষ্ট্রকে উন্নত করতে চাই। ইউরোপে ১০০ বছরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু ১০০ বিয়ের মধ্যে ৫০টি ভেঙে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু ইউরোপের মতো সমাজকে সেই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই না। মানুষ শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে, পরিবারকে নিয়েও ভাবে না। পরিবার ছোট হয়ে যাচ্ছে। আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের সমাজ যেন অন্ধ অনুকরণের দিকে অগ্রসর না হয়। এ লক্ষ্যে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বক্তব্য দেন চুয়েটের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম। এসময় আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা এদেশের অন্যতম মেধাবী। সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগতভাবে কর্মরত আছেন। আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এ মাস ডিসেম্বর মাস, বিজয়ের মাস।

অনুষ্ঠানে বিআইটির সাবেক পরিচালক ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন, অধ্যাপক সৈয়দ মতিনুর রশিদ, অধ্যাপক আ ক ম রেজাউল করিম, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সম্মাননা জানানো হয়।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
তথ্যমন্ত্রী,চট্টগ্রাম,চুয়েট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close